বিজয়ের যাত্রা শুরু: মির্জা ফখরুল

বিজয়ের যাত্রা শুরু: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আজকের বিজয় র‌্যালির মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয়ের যাত্রা শুরু হলো। শেখ হাসিনাকে বিদায় করে আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো।”

মহান বিজয় দিবস ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে র‌্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকাল সোয়া চারটায় রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাপনী সমাবেশে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
র‌্যালি শেষে ট্রাকে স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চ থেকে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে লাখো মানুষের অংশগ্রহণের এই র‌্যালি প্রমাণ করেছে দেশের মানুষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। দেশের মানুষ দেখতে চায়, অবিলম্বে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ করা হচ্ছে। দেশের মানুষ তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চায়। আজকের র‌্যালি প্রমাণ করেছে দেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, কথা বলতে চায়, মুক্তভাবে স্বাধীনতা ভোগ করতে চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য শেষ বিন্দু রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করবো।

সমাপনী  বক্তব্য দিয়ে মির্জা ফখরুল গাড়িতে নয়াপল্টন ত্যাগ করেন। এর আগে, র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করে শান্তিনগর ঘুরে এসে নয়া পল্টনে নিজের কার্যালয়ে এসে সামান্য সময় বিশ্রাম নিয়ে মঞ্চে যান। এসময় বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, র‌্যালির জমায়েত নিয়ে তারা সন্তুষ্ট।
র‌্যালি আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করার আগে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর বিএনপির (দক্ষিণ) আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উত্তর আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।

নেতারা র‌্যালিতে বিপুল জমায়েতের জন্য বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও অনুসারীদের ধন্যবাদ জানান।

বিএনপি নেতা আবদুস সালাম জানান, রবিবার সকাল ১১টা থেকেই র‌্যালিতে অংশ নিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা নয়া পল্টনে আসতে শুরু করেন। বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে র‌্যালি শেষ হয়।

বিকাল পৌনে তিনটার দিকে শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত র‌্যালি অব্যাহত ছিল। একের পর এক মিছিলে র‌্যালিতে নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে। এসময় তারা নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার বহন করে। পুরো মিছিলে জাতীয় পতাকা মাথায় ও হাতে পতাকা উড়াতে দেখা গেছে। র‌্যালিতে খালেদা জিয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পরিস্থিতি তুলে ধরতে একজন নারী ‘প্রতীকী’ভাবে মিনি ট্রাকে অবস্থান নেন।

র‌্যালি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেলেও কোনও অঘটন ঘটেনি। র‌্যালির শেষ দিকে যুবদল, ছাত্রদল অনুসারীদের মধ্যে পৃথক হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

বিএনপির র‌্যালিকে কেন্দ্র করে নয়া পল্টন, কাকরাইল, পুরানা পল্টন, মতিঝিল থেকে ফকিরাপুল, বিজয়নগর, শান্তিনগর, মালিবাগ এলাকায় ব্যাপক যানজট হয়। বিকাল সাড়ে চারটায় নয়া পল্টনের সামনের সড়কটি স্বাভাবিক হয়। র‌্যালি চলাকালে নয়া পল্টনের সড়কের দুই পাশের দোকানপাট বন্ধ থাকলেও সাড়ে চারটার পর খুলে যায়।

বিজয় দিবস ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত বিএনপির র‌্যালিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ওলামা দল, কৃষক দল, জাসাস, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

র‌্যালি শুরু হওয়ার প্রায় ৪৫ মিনিট পর কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে কয়েকজন অনুসারী নিয়ে শেষ মুহূর্তে র‌্যালিতে প্রবেশ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।