বেক্সিমকো গ্রুপের ৪০ হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারি: তদন্তের ঘোষণা

বেক্সিমকো গ্রুপের ৪০ হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারি: তদন্তের ঘোষণা

বাংলাদেশ সরকার বেক্সিমকো গ্রুপের ভয়াবহ ঋণ কারচুপির প্রমাণ পেয়েছে। অস্তিত্বহীন ১৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া, মাত্র পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জামানত রেখে প্রতিষ্ঠানটি ২৮ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।

মঙ্গলবার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসা পরিস্থিতি পর্যালোচনাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের ষষ্ঠ বৈঠকে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বেক্সিমকোর ঋণ কেলেঙ্কারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির চেয়েও বড় কেলেঙ্কারি।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বেক্সিমকো গ্রুপকে ঋণ দেওয়া ব্যাংকগুলোর তদন্ত করা হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।

সরকার জানিয়েছে, বেক্সিমকোর বন্ধ ১২টি প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং শ্রমিকদের পাওনা ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিশোধ করা হবে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটির অবিক্রীত শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

তদন্তের আওতায় থাকা ঋণের বিশদ বিবরণ:

  • জনতা ব্যাংক: ২৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা (মাত্র ১০৭৭ কোটি টাকা জামানত)
  • সোনালী ব্যাংক: ১৪২৪ কোটি টাকা (জামানত ১১৮৭ কোটি টাকা)
  • অগ্রণী ব্যাংক: ৪২০ কোটি টাকা (জামানত ৬২ কোটি টাকা)
  • রূপালী ব্যাংক: ৯৮৬ কোটি টাকা (জামানত ১৭৬৭ কোটি টাকা)
  • ইউসিবি ব্যাংক: ৩৩৩ কোটি টাকা (কোনো জামানত ছাড়াই)
  • এবি ব্যাংক: ৯৩৮ কোটি টাকা (জামানত মাত্র ৭ কোটি টাকা)
  • এক্সিম ব্যাংক: ৪৯৭ কোটি টাকা (জামানত ২০৩ কোটি টাকা)

তদন্তের অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলোর কাছে জানতে চাওয়া হবে, এত বড় অঙ্কের ঋণ কীসের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছিল। ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে শ্রম উপদেষ্টা নিশ্চিত করেছেন।