স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির হাত ধরে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মের রাজনীতির পুনরুত্থান ঘটেছে: রাশেদ খান মেনন

স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির হাত ধরে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মের রাজনীতির পুনরুত্থান ঘটেছে: রাশেদ খান মেনন

বরিশাল আইনজীবি হলে সাম্প্রদায়িকতা ও তার পরিণাম সম্পর্কে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলার সাধারণ সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির ভাষণে পার্টির সভাপতি জননেতা কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্ম নিয়ে রাজনীতির পরাজয় ঘটিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির হাত ধরে সেই সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী শক্তির রাজনীতির পুনরুত্থান ঘটেছে। জিয়া-এরশাদ-খালেদা-নিজামীর সময় পেরিয়ে বর্তমান সময়ে তার ক্রমবিস্তৃতি ঘটেছে রাষ্ট্র ও সমাজে। এ কারণেই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার হোতারা রেহাই পেয়ে যায়। খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সামনেই ‘ব্লাসফেমী আইন’ প্রণয়নের জামাতের দাবি উচ্চারিত হতে পারে ‘আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণা দেয়ার দাবি। 

তিনি আরো বলেন, অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে সরকারি কর্তাব্যক্তিদের সামনে প্রকাশ্যেই বাংলাদেশকে ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্র’ ঘোষণার দাবি উচ্চরণ করা যাবে। অথচ বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে তার প্রথম বক্তৃতাতেই বলেছিলেন বাংলাদেশে আর ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি করেছিলেন। আজ ধর্মনিরপেক্ষতা কাগজে-কলমে ফিরে এসেছে কিন্তু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলছে জোরেসোরেই। সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার ঘটেছে রাষ্ট্র ও সমাজে। বিস্তার ঘটেছে সাম্প্রদায়িকতাই দুর্নীতি, বৈষম্য আর শোষণমুক্তির লড়াইকে অতীতের মতই ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। 

গতকাল ৪ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় বরিশাল আইনজীবি হলে সাম্প্রদায়িকতা ও তার পরিণাম সম্পর্কে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলার সাধারণ সভায় অনুষ্ঠিত হয়।

বরিশাল জেলার সভাপতি কমরেড নজরুল হক নীলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সাধারণ সভায় রাজনীতি ও সমাজে সাম্প্রদায়িকতা রুখতে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির অবস্থান ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, জেলা সাধারণ সম্পাদক কমরেড এড. টিপু সুলতান, কমরেড মোজাম্মেল হক ফিরোজ, কমরেড শাজাহান তালুকদার, কমরেড গোলাম হোসেন প্রমুখ।

রাশেদ খান মেনন বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় সাম্প্রদায়িক হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। জিয়া-এরশাদ-খালেদা ও বর্তমান আমলেও ধর্ম নিয়ে রাজনীতির যে চর্চা হচ্ছে, বিভিন্ন ধর্মসভা ও ইউটিউবে ধর্মীয় বিদ্বেষ প্রচার করা হচ্ছে তারই ফলশ্রুতি এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। কিন্তু দুভার্গ্যজনকভাবে মূল বিষয় বাদ দিয়ে আমরা দোষারোপের রাজনীতি দেখেছি। বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হতে হলে তার আবশ্যিক ভিত্তি হতে হবে অসাম্প্রদায়িকতা। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর এটাই হোক আমাদের প্রত্যয়।