অন্য পেশায় নিযুক্ত,৪১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

অন্য পেশায় নিযুক্ত,৪১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

 

বরিশালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ নিয়ে অন্য পেশায় যুক্ত থাকা ৪১ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে জেলা আইনজীবী সমিতি। অন্য পেশায় নিয়োজিত নন মর্মে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হলফনামা দিয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ অর্জন করেছিলেন তারা। কিন্তু সনদ অর্জনের পর সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করছেন বরিশালের ওই ৪১জন আইনজীবী।

বরিশালে বার কাউন্সিল থেকে সনদ নিয়ে আইনজীবীর সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে অনেকের বিরুদ্ধে। আইন পেশায় জড়িত না থাকলেও নিজেদের আইনজীবী পরিচয় দিয়ে তারা বিতর্ক সৃষ্টি করছেন। এ ধরণের অভিযোগে বরিশালের ৪১ আইনজীবীর সনদ স্থায়ীভাবে বাতিলসহ হলফনামায় মিথ্য তথ্য দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর আবেদন জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য মো. জসিম উদ্দিন।

বার কাউন্সিল থেকে সনদ নিয়ে অন্য পেশায় যুক্তরা হলেন বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার (সনদ নং ২৬৫), উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান খান (সনদ নং ৩১৬), শিল্প ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. মোফাজ্জেল হোসেন পাইক (সনদ নং ৩৮০) ও একই ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. আব্দুল হাকিম (সনদ নং ৩৮৮), রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উপ-পরিচালক আলী আসগর ফকির (বরিশাল আইনজীবী সমিতির সদস্য নং ২০৩), আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মুশফিকুর রহমান তালুকদার টুনু (সদস্য নং ২৩৮), অবসরপ্রাপ্ত উপজেলা খাদ্য অফিসার এবিএম আক্তারুজ্জামান খান (সনদ নং ৪৮১), শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল হক (সনদ নং ৪৭৭), বরিশাল সিটি কলেজের প্রদর্শন শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন (সনদ নং ৪৯৮), বরিশাল অক্সফোর্ড মিশন হাইস্কুলের শিক্ষক সুনীল বরণ হাওলাদার (সনদ নং ৫৩৪), তালুকদার হাট কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মো. হানিফ মল্লিক (সনদ নং ৫৩৩), বরিশাল সিটি কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত কুমার দেবনাথ (সনদ নং ৫৩২), একই কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরুচি রাণী কর্মকার (সনদ নং ৫৬৭) আগরপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ একেএম জালাল আহম্মেদ (সমিতির সদস্য নং-৩০৫), একটি সরকারি প্রাথমিক  বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শৈলেন্দ নাথ রায় (সনদ নং ৫৮১), নগরীর আলেকান্দা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম (সনদ নং ৫৮৮), সিএন্ডবির হিসাব রক্ষক মো. খলিলুর রহমান (সনদ নং ৪৮২), বাউফলের কালাইয়া ইদ্রিস মোল্লা কলেজের শিক্ষক মো. আবদুল বারেক (সনদ নং ৫৮৯), দপদপিয়া ইউনিয়ন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাজাহান মিয়া (সনদ নং ৭৬০), বাকেরগঞ্জের কাকরধা কলেজের শিক্ষক শুভাশিষ মন্ডল (সনদ নং ৬৯৪), বিএসটিআই পিরোজপুরের কর্মকর্তা এসএম ইলিয়াস উদ্দিন মল্লিক (সনদ নং ৭৮৬), মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দুলাল ব্যানার্জী (সনদ নং ৭৭৮), স্বরূপকাঠি সরকারি পাইলট হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আরমান ফরিদ (সনদ নং ৭৯০), কুড়িয়ানা কবি রবিন্দ্রনাথ কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুব্রত চক্রবর্তী (সনদ নং ৮০১), নগরীর মল্লিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফাতেমা জোহরা বীনা (সনদ নং ৮১০), ধাপড়কাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সালাউদ্দিন হাওলাদার লিটন (সনদ নং ৮১৩), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী মো. শফিকুল আলম রিয়াজ (সনদ নং ৮৭২), ইউপি সচিব মো. শহীদুল হক রিয়াজ (সনদ নং ৮৭৩), রূপাতলী মাদ্রাসা’র সহকারী অধ্যাপক মো. ফারুক বিন ওয়াহিদ (সনদ নং ৮৮৫), বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী মো. সেলিম হোসেন (সনদ নং ৯৬৩), নলছিটি ডিগ্রী কলেজের প্রদর্শন শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম খসরু (সনদ নং ৯৫০), নগরীর সরস্বত বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আকতার ফারুক জাহিদ (সনদ নং ৯৮৫), বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রসেসর মো. আবুয়াল সাইদ মামুন (সনদ নং ১০৩১), কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা রবীন্দ্র চন্দ্র্র দাস (সদস্য নং ৯০৯), উজিরপুরের হাজী তাহের উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম (সনদ নং ৯৭৯), চরকাউয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. মনিরুল ইসলাম (সনদ নং ৬০২), দপদপিয়া ইউনয়ন কলেজের অধ্যক্ষ লুনা মুন্সী (সনদ নং ৫৫৩), বাকেরগঞ্জের পাদ্রিশিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মো. খলিলুর রহমান-১ (সনদ নং ৫৯৮), বাকত্তরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দীপ শঙ্কর গুপ্ত (সনদ নং ৮০০), গলাচিপা ঘোসের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক মো. মিজানুর রহমান বাচ্চু (সদস্য নং ৭৮০) এবং হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মকর্তা মো. আবু বকর সিদ্দিক (সনদ নং ১০২১)। 

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম জানান, বার কাউন্সিলের সনদ নিয়ে কেউ অন্য পেশায় নিযুক্ত হতে পারবে না। ৪১জন আইনজীবীর সনদ বাতিল চেয়ে বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর পাঠানো আবেদনের অনুলিপি জেলা আইনজীবী সমিতিও পেয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতি আবেদনে উল্লেখিত ৪১জনের তালিকা যাচাই-বাছাই করে তাদের নোটিশ করবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জেলা আইনজীবী সমিতি তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। অপরদিকে বার কাউন্সিলও বিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি জানান।