অর্থ পাচার মামলায় ৩৬৬ ব্যাংক হিসাব জব্দ: ১৫ হাজার কোটি টাকার তদন্ত

গত বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে অর্থ পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগে ৩৬৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) তথ্য অনুযায়ী, এসব হিসাবে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। ১১২টি মামলার ভিত্তিতে এ হিসাবগুলো জব্দ করা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অর্থ পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত জোরদার করে বিএফআইইউ। এ পর্যন্ত প্রায় ২২৫টি সন্দেহজনক লেনদেনের তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশের সিআইডি ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে।
জব্দ করা হিসাবগুলোর তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা ও রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। এছাড়াও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ আকবর সোবহানসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের হিসাবও রয়েছে।
তালিকায় আরও রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মকর্তাদের নাম, যেমন সামিট গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, নাসা গ্রুপ ও নাবিল গ্রুপ।
এছাড়াও, সাংবাদিকদের মধ্যে শেখ হাসিনার সাবেক প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান এবং একাত্তর টিভির সাবেক প্রধান নির্বাহী মোজাম্মেল হক বাবুর ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে।
বিএফআইইউ জানিয়েছে, সন্দেহজনক লেনদেন বা অর্থ পাচারের প্রমাণ না পাওয়া গেলে জব্দ করা হিসাবগুলো পুনরায় চালু করা হবে। বর্তমানে তারা বিভিন্ন ব্যবসায়িক গ্রুপের অর্থ পাচার, ঋণ জালিয়াতি এবং সরকারি তহবিলের অপব্যবহার তদন্ত করছে।
এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন সিআইডি ও দুদকে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহের জন্য সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিএফআইইউ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ তদন্তগুলো আর্থিক খাতের সুশাসন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।