অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সাংস্কৃতিক কর্মীদের অবদান অবিস্মরণীয়: জসীম উদ্দীন

অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সাংস্কৃতিক কর্মীদের অবদান অবিস্মরণীয়: জসীম উদ্দীন

বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সাংস্কৃতিক কর্মীদের অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ সকল সংকটে সাংস্কৃতিক কর্মীরা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করেছে। বাংলাদেশকে প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে চলেছে সাংস্কৃতিক কর্মীরা। তাই বরিশালের অগ্রগতিতে সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই।

বরিশালের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠক ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতনিবিনময় সভায় এসব কথা বলেন বরিশালের নতুন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।

বৃহষ্পতিবার বিকেল চারটায় জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ না হলে, দেশ স্বাধীন না হলে আমি জেলা প্রশাসক হতে পারতাম না। আমাদের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ, দুই লাখেরও বেশি মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময় আমরা অর্জন করেছি আমাদের বিজয়। যাদের কারণে দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের মর্যাদা ও সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে হবে। আগামী ১০-১৫ বছর পর হয়তো চাইলেও একজন মুক্তিযোদ্ধাকে পাওয়া কঠিন হবে। সেই জন্য আজ থেকে জেলা প্রশাসকের চেয়ারের পাশে একটি চেয়ার স্থাপন করেছি। সেই চেয়ারটি হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধার চেয়ার। 

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পরই আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ভূমিকার কথা বলতে হয়। সাংস্কৃতিক কর্মী-সংগঠকরা শ্রদ্ধার মানুষ। অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মী-সংগঠক, লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও সমাজসেবীরা কাজ করছেন। যার ফল হচ্ছে আমাদের আজকের বাংলাদেশ। সাংস্কৃতিক কর্মীরা ধর্মান্ধ হয় না। পরিশিলীত মানুষ গড়ে তুলতে কাজ করে সংস্কৃতি। সংস্কৃতিকর্মীরা মাদক, সন্ত্রাসসহ সকল নেতিবাচক কাজের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। তারা প্রগতির পথে হাঁটে। আগামী দিনে বরিশালের সকল কাজে সাংস্কৃতিক কর্মী-সংগঠকদের সহযোগী হয়ে কাজ করবে জেলা প্রশাসন। তাদের নিয়েই বরিশালের অগ্রযাত্রার পথ তৈরিতে কাজ করবে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধ থাকতেই হবে। কিন্তু ধর্ম দিয়ে মানুষকে বিচার করলে হবে না। আগে ধর্ম হতে পারে না। ধর্মীয় অনুভূতি যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। কারো ধর্মের প্রতি আঘাত করাকে কোন ধর্ম অনুমোদন দেয় না। ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে দেওয়া, হত্যা ইসলাম ধর্মে নেই। ইসলাম শান্তির ধর্ম। তোমার জন্য তোমার ধর্ম, আমার জন্য আমার ধর্ম। এই বিশ^াস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কারো ধর্মকে খাটো করে দেখার সুযোগ নাই।

বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশান্ত কুমারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম, উদীচীর সংগঠক, সাংবাদিক ও আইনজীবী মানবেন্দ্র বটব্যাল, আইনজীবী ও সাংবাদিক এসএম ইকবাল, মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মানিক (বীরপ্রতীক), জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ হোসেন, বরিশাল নাটক সভাপতি কাজল ঘোষ, শব্দাবলী গ্রুপ থিয়েটারের সভাপতি সৈয়দ দুলাল, সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা, খেলাঘর বরিশালের সাবেক সভাপতি জীবন কৃষ্ণ দে, বর্তমান সভাপতি নজমুল হোসেন আকাশ, খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের সাবেক সভাপতি স.ম. ইমানুল হাকিম, কবিতা পরিষদের সভাপতি তপংকর চক্রবর্তী, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য আজমল হোসেন লাবু, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী বরিশাল জেলা সভাপতি সাইফুর রহমান মিরণ, সাধারণ সম্পাদক স্নেহাংসু বিশ্বাস, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেনশানের সভাপতিম-লীর সদস্য শুভংকর চক্রবর্তী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বাসুদেব ঘোষ, উন্নয়ন সংগঠক রহিমা সুলতানা কাজল, খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ চক্রবর্তী, উদীচী ও বরিশাল নাটকের সংগঠক পাপিয়া জেসমিন, বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিন্টু কুমার কর, আবুল খায়ের সবুজ, উত্তরণ সভাপতি জোবায়ের হোসেন শাহেদ, সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহম্মেদসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিরা।