আগামী জুনেই উন্মুক্ত হবে পায়রা সেতু

আগামী জুনেই উন্মুক্ত হবে পায়রা সেতু

বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের দীর্ঘতম সৌন্দর্যমণ্ডিত ও দেশের দ্বিতীয় এক্সট্রাডোজ ক্যাবল বক্স গার্ডার পায়রা (লেবুখালী) সেতু ২০২১ সালের জুনে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে।

এরইমধ্যে সেতুর ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সেতুটি চালু হলে দক্ষিণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ব্যবস্থা স্থাপিত হবে।
নির্মাণাধীন পায়রা সেতুতে পদ্মা সেতু থেকেও ৫০ মিটার বড় দু’টি স্প্যান বসানো হবে। নান্দনিক এক্সট্রাডোজ ক্যাবল বক্স গার্ডার ব্রিজটিতে নদীর মধ্যে মূল ব্রিজ হবে ৬৩০ মিটার। এজন্য ২০০ মিটারের দু’টি স্প্যান ও দু’পাশে দু’টি স্প্যান ১১৫ মিটার করে হবে। যা দেশের সবচেয়ে বড় সেতু পদ্মা সেতু ব্রিজের স্প্যানের থেকেও বড়।  

চার লেন বিশিষ্ট এক হাজার ৪৭০ মিটার (চার হাজার ৮২০ ফুট) দৈর্ঘ্যের ও ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার (৬৪ দশমিক ৮ ফুট) প্রস্থের এক্সট্রা বক্স গার্ডার ব্রিজটির উভয় দিকে সাত কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণ করা হবে অ্যাপ্রোচ সড়ক। ব্রিজটির প্রাক্কলিত নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা।

এছাড়া সেতুটি নদীর জলতল থেকে ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু হবে। ফলে নদীতে নৌযান চলাচলে কোনো অসুবিধা হবে না। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত হবে সেতুটি।


বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পায়রা নদীর উপর ‘লেবুখালী সেতু’ নির্মাণের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দার উম্মুক্ত হচ্ছে সর্বদক্ষিণের।

এ সেতুকে ঘিরে পরিকল্পনায় ব্যস্ত রয়েছেন ছোট-বড় নানা ধরনের ব্যবসায়ীরা। হোটেল-মোটেল, তেল পাম্পসহ এমনকি জমির মালিকরাও।

কুয়েত সরকারের অর্থায়নে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে চায়নার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান চাইনিজ কোম্পানি সেতুটি নির্মাণ করছে। দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে সেতুটির নির্মাণকাজ। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
 
পটুয়াখালী-বরিশাল চলাচলকারী গণপরিবহনের চালক নিজাম বলেন, সেতুটি চালু হলে আর কোনো ভোগান্তি থাকবে না। পদ্মা সেতুও প্রায় হয়ে গেছে। এরপর আমরা দিনে দু’বার আসা-যাওয়া করতে পারবো। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পটুয়াখালী পৌঁছানো যাবে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক গুণ সহজ হবে।  

পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল খালেক বলেন, আমরা মূল ব্রিজের কাজে এগিয়ে আছি। এরইমধ্যে পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষা ও করোনার কারণে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। এরইমধ্যে সেখান থেকে ২৫ শতাংশ কাজ অগ্রগতি হয়েছে। ২০২১ সালের জুনে ব্রিজের সার্বিক কাজ সম্পন্ন করে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, মূলত ব্রিজের ফাউন্ডেশন ও পানির গতিপথ পরিবর্তনের কারণেই কাজ বাস্তবায়নে দেরি হয়েছে। এছাড়া ব্রিজের ডিজাইনও পরিবর্তন হয়েছে।

২০১২ সালের ৮ মে একনেক সভায় প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদন লাভ করে। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা নদীর উপর পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কের পায়রা নদীর উপর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।


ভোরের আলো/ভিঅ/০৪/১২/২০২০