আমতলীতে খাল দখল মুক্ত করলেন উপজেলা প্রশাসন

বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের রাওঘা গ্রামে প্রভাবশালীর কবল থেকে সরকারী খাল দখল মুক্ত করেছেন উপজেলা প্রশাসন।
আজ রবিবার দুপুর ১২টায় দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মাদ আশরাফুল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল জাহের, আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু, বরগুনা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য অ্যাডঃ আরিফ উল হাসান আরিফ সরেজমিন গিয়ে পরিদর্শন করে ও দখলকৃত খালের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে খালটি দখলমুক্ত করার ঘোষনা দেন। ওই সময় উপস্থিত কয়েক শত ভুক্তভোগি কৃষক খালের মধ্যে স্থাণীয় প্রভাবশালী হবিবুর রহমান ও মাওলানা সুলতান আহমেদের দেয়া বাঁধ দুটি কেটে খালটি দখলমুক্ত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দক্ষিন রাওঘা ও উত্তর রাওঘা গ্রামের উপড় দিয়ে বয়ে যাওয়া জেএল নং ২৫ এর ৩০২০ নং দাগে ১ একর ২৪ শতাংশ একটি খাল যা জনসাধারনের ব্যবহার্য নৌকা ইত্যাদি চলাচলের জন্য ইউনিয়ন বোর্ড রক্ষিত বলে রেকর্ডে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু সমগ্র খালটি এলাকার প্রভাবশালী মামলাবাজ নামে খ্যাত মোঃ হাবিবুর রহমান, মো. জালাল আকন, মাওলানা সুলতান আহমেদ খালটির মধ্যে ২টি বাঁধ দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করেছেন।
খালের দুইপাড়ে বসবাসরত প্রায় শতাধিক পরিবারকে ওই খালের পানি ব্যবহার করতে দিচ্ছিলোনা। কৃষি কাজ, গরু ও মহিষকে পানি পান করানো, গৃহস্থলি কাজের থালা ভাসন ধোয়ার কাজ করতে পর্যন্ত দিচ্ছেনা। এককথায় খালের পাড়ে বসবাসরত শতাধিক পরিবারের লোকজনদেরকে ওই খালের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছিল খাল দখলকারীরা। সম্প্রতি খালের পাড়ে বসবাসরতদের পালিত হাঁস ওই খালে প্রবেশ করায় দখলকারীরা তা ধরে জবেহ করে ভুড়িভোজ পর্যন্ত করেছে।
দখলকারীরা এতটা প্রভাবশালীযে গ্রামবাসীরা কেহ তাদের এহেন কার্যকলাপের প্রতিবাদ করতে পারতোনা। যেই তাদের এসব কার্যকলাপের প্রতিবাদ করেছে তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করা হত।
মাসখানেক আগে প্রভাবশালীদের দখল থেকে খালটি মুক্ত করে সাধারণ মানুষদের ব্যবহার করার দাবীতে রাহিমা বেগম, নাছিমা বেগম, জসিম উদ্দিন বাবুল মৃধা, নাইম, জাহিদুলসহ শতাধিক ভূক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে উপজেলা প্রশাসন ভূক্তভোগিদের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আজ রবিবার দুপুর কয়েকশত কৃষকের উপস্থিতিতে খালের মধ্যে থাকা প্রভাবশালীদের দেয়া বাঁধ দুটি কেটে দেন।
ভূক্তভোগি জসিম মৃধা, বাবুল মৃধা বলেন, আমরা খুশি প্রশাসন আমাদের দাবী পূরণ করেছেন। খালের বাঁধ অপসারন করে খালটি দখল মুক্ত করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্দ আশরাফুল আলম মুঠোফোনে বলেন গ্রামবাসীর অভিযোগের তদন্তপূর্বক সত্যতা পাওয়ায় খালটি দখল মুক্ত করে ভূক্তভোগি শতশত কৃষকের উপস্থিতিতে খালের মধ্যে থাকা বাঁধ দুটি কেটে কৃষকদের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।