আমতলীতে ১ সপ্তাহে ২৯ করোনা রোগী শনাক্ত

বরগুনার আমতলীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলছে। গত ৭দিনে ৪৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৯ জন। করোনার সংক্রমণরোধে চলমান সরকারি বিধি-নিষেধ উপজেলার কোথাও মানা হচ্ছে না। ফলে উপজেলা ব্যাপী করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, উপজেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে বাড়ীতে বাড়ীতে সর্দি- কাশি, জ্বর ও গলাব্যথা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। হাসপাতালে এখন যেসব রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন তাদের অধিকাংশ ওই সমস্যায় ভূগতেছেন। গত বুধবার থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭দিনে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ওই ৭দিনে উপজেলায় ৪৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ২৯ জন। আজ (মঙ্গলবার) ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
অপরদিকে আমতলী পৌরসভাসহ উপজেলার কোথাও করোনার সংক্রমণ রোধে জারি থাকা সরকারি কঠোর বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে না। একেবারেই শিথিল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অন্যদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে উপজেলা প্রশাসন মাঝে মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করলেও স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যকর কোন উদ্যোগ না থাকায় ক্রমেই উপজেলায় করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বমুখী গতি ঠেকাতে না পারলে উপজেলা ব্যাপী করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আমতলী সরকারী কলেজের কম্পিউটার বিভাগের প্রভাষক মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, মানুষ তো এখন আর করোনাকে ভয় পায় না। শহর ও গ্রামে কোথায় কেহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে না। বাহিরে ১০০ লোকের মধ্যে ৯০ জন মুখে মাস্ক পড়ে না। বিধি নিষেধ মানতে প্রশাসনের চোঁখে পড়ার মত কোন পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত নিতে পারেনি। আর যেভাবে আমতলীতে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে তা দ্রুত রোধ করতে না পারলে তা উপজেলা ব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।
এদিকে উপজেলায় করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ রয়েছে উদ্বেগের মধ্যে। করোনার রোগী দ্রুত বেড়ে গেলে হাসপাতাল আইসোলেশন ও অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখতে নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাসপাতালের ৩য় তলায় ১০টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মজুদ রাখা হয়েছে ৩০টির মত অক্সিজেন সিলিন্ডার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, মানুষকে সচেতন করতে প্রচার- প্রচারনার পাশাপাশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। গত ২দিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, জ্বর, সর্দি-কাশি ও গলাব্যথার প্রকোপ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা করোনার জন্য না সিজনাল ভাইরাস তা পরীক্ষা নিরিক্ষা করা ছাড়া এই মুমুর্তে বলা যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, গত এক সপ্তাহে আমতলীতে ২৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ১০টি বেড এবং ৩০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রস্তুত রেখেছি।