ইনফ্রায় দুই পরিচালকের সমিতি নিয়ে দ্বন্দের অভিযোগ

বরিশালের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইনফ্রা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর দুই পরিচালকের মধ্যে শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারী কল্যান সমিতি নিয়ে দ্বন্দের অভিযোগ উঠেছে। দুই পরিচালরেক মধ্যে একজন পরিচালক দির্ঘ ১০ বছর পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। পাশাপাশি কোন প্রকার নিয়ম না মেনেই প্রতিষ্ঠানটিতে একতরফা ভাবে ইনফ্রা ইন্সটিটিউট শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারী কল্যান সমিতি নামে একটি সংগঠনের অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানের এক নম্বর পরিচালক প্রকৌশলী মো. আমির হোসাইন। যা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইন বহিঃভূত বলে দাবি করেন তিনি।
তার দাবি, প্রতিষ্ঠানের সহযোগী পরিচালক প্রকৌশলী মো. ইমরান চৌধুরী কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে একটি সংগঠন বানিয়েছে। এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটলে যে কোন সময় শিক্ষক কর্মচারীরা ধর্মঘটসহ নানা কর্মসূচী দেবে। যা প্রতিষ্ঠানের জন্য হুমকী স্বরুপ। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটবে বলে দাবি করেন তিনি।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে দুই জন পরিচালক। যার ৫০ ভাগ মালিকানা প্রকৌশলী মো. ইমরান চৌধুরী এবং অন্য ৫০ ভাগ মালিকানা প্রকৌশলী মো. আমীর হোসেন। তবে আমীর হোসেন-এর ৫০ ভাগ মালিকানা থাকা সত্বেও কোন মতামত না নিয়ে প্রকৌশলী মো. ইমরান চৌধুরী নিজের খেয়াল খুশিমত প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বুধবার (২২ জুন) বরিশাল নগরীর কাশিপুর এলাকার ইনফ্রা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে সরজমিনে দেখা যায়, ক্লাস বন্ধ রেখে ইনফ্রা ইন্সটিটিউট শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারী কল্যান সমিতি নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান করছে। এসময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ঘোড়াঘুরি করতে দেখা যায়’
এ বিষয়ে ইনফ্রা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর ১ নম্বর পরিচালক প্রকৌশলী মো. আমীর হোসেন বলেন, ‘২০০৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে এগিয়ে গেলেও বর্তমানে একটি চক্র প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করতে বিভিন্ন চক্রান্ত করছে। বর্তমানে কলেজে প্রায় ১ হাজার ৭শ’র বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। যাদের অনেকের পরিবার অনেক কষ্ট করে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার খরচ যোগাচ্ছে। পাশাপাশি আমরাও মাসে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা কর্মকর্তা, শিক্ষক, ও কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছি। আমি ও প্রকৌশলী মো. ইমরান চৌধুরী দুই জনে এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। কিন্তু প্রকৌশলী মো. ইমরান চৌধুরী আমাকে কোন বিষয়ে অবগত না করে নিজের ইচ্ছামত প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। সে বিভিন্ন ভাবে প্রতিষ্ঠানের টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে। দির্ঘ ১০ বছর সে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব পালন করছে। মেয়াদ অনেক আগে শেষ হলেও পদ থেকে সড়ে না দাড়িয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।’
শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজে একটি সেমিনার চলছে তাই ক্লাস বন্ধ রয়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা অলস সময় পার করছেন তারা। দুপুর দুইটার পর ক্লাস হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে ইনফ্রা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর পরিচালক অভিযুক্ত প্রকৌশলী মো. ইমরান চৌধুরী বলেন, ‘লেবার আইন অনুযায়ী আমরা একটি কমিটি করেছি। তবে এটা আমি করিনি, শিক্ষক কর্মচারীরা করেছে আমাকে তারা দাওয়াত করেছে। তাই আমি তাদের অনুষ্ঠানে এসেছি।’
কেন এই সংগঠন করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিচালক ও পরিচালনা পর্ষদের হাতে অনেক শিক্ষক-কর্মচারিকে লাঞ্চিত হতে হয়। এছাড়াও শিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া থাকতে পারে তাই এই সংগঠন খোলা হয়েছে। এখানে কিছু বিষয় রয়েছে যা এখন বলতে পারবোনা। আপনাদের সাথে পরে কথা বলবো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইনফ্রা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এম এ রহিমের মুঠো ফোনে কল করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ কারিগড়ি শিক্ষা বোর্ডের সচীব আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এ ধরনের কোন বিধান নেই। কেউ যদি এমনটা করে থাকে তবে সেটা তাদের নিজস্ব।’