ইলিশ পাচার বন্ধ করতে হবে

ইলিশ পাচার বন্ধ করতে হবে
আমরা সমুদ্র জয় করেছি। শুনতে বেশ ভালো লাগে। কিন্তু সমুদ্রসীমা রক্ষায় আমাদের উদ্যোগ কতটুকু সেটা ভেবে দেখার সময় এসেছে। আমাদের সমুদ্রসীমায় অহরহ মাছ শিকারে ঢুকে পড়ছে ভারত ও মিয়ানমারের জেলেরা। আমাদের সমুদ্রসীমায় নির্ধিদায় মাছ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে তারা। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না কিংবা হচ্ছে না। আমাদের জলসীমা রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হলে আমাদের ইলিশ সম্পদসহ মৎস্য সম্পদ রক্ষা পাবে না। আমাদের জলসীমা থেকে ইশিল পাচার বন্ধ করতে হবে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার ৬৫দিন সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বাংলাদেশের জেলেদের অধিকাংশ ওই নিষেধাজ্ঞা মানলেও কিছু সংখ্যক দেশি জেলে ইলিশ মাছ ধরে গভীর সমুদ্রে সেগুলো ভারত পাচারে সযোগিতা করেছে। নিষিদ্ধ সময় ওই চক্র ইলিশ ধরা বন্ধ করেনি। একই সময় ভারত এবং মিয়ানমারের জেলেরা আমাদরে জলসীমায় ইলিশ মাছ শিকার করেছে এমন অভিযোগও উঠেছে। ওই ইলিশ ভারত ও মিয়ানমারের বাজারে বিক্রি হয়েছে। যদি আমাদের জলসীমা রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা থাকতো তাহলে আমাদের ইলিশ সম্পদ পাচার হওয়ার সুযোগ থাকতো না। টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে ইলিশ শিকারে নেমেছে দেশের জেলেরা। বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। বাজারে আমদানী বাড়ছে, কমেছে দাম। এই সময়ও গভীর জলসীমায় অন্য দেশের জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে না। এই কাজে আমাদের দেশি কিছু জেলেরাও জড়িত রয়েছে। তাই সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও বাংলাদেশের মানুষ ইলিশের স্বাদ গ্রহণের সুযোগ সেভাবে পাচ্ছে না। আমরা চাই, আন্তর্জাতিক আদালতে আমরা যেভাবে সমুদ্র জয় করেছি। সেভাবেই আমাদের সমুদ্রসীমা রক্ষায় উদ্যোাগ নেওয়া হোক। তাহলে আমাদের ইলিশ সম্পদসহ মৎস্য সম্পদ আরো বৃদ্ধি পাবে। আমাদের দেশের জেলেদের সাগরে মাছ ধরার জন্য আধুনিক বোট নেই। আমদের জেলেরা গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে তেমন অভিজ্ঞও নয়। অথচ বিশ্বের দেশে দেশে সমুদ্রে মাছ শিকারের আধুনিক ব্যবস্থা থাকায় তারা নির্ভয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করতে পারছে। আমাদের সীমাবদ্ধতাকে পূজি করে অন্য দেশের জেলেরা আমাদের জলসীমায় এসে ইলিশ ও অন্য মাছ শিকার করে নিয়ে যেতে পারছে। তাই নিষেধাজ্ঞার সময় এবং ইলিশ মৌসুমে যাতে বাইরের কোন জেলে আমাদের জলসীমায় মাছ শিকার করতে না পারে তার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে সাগরে মাছ শিকারের জন্য আধুনিক ব্যবস্থা থাকতে হবে। দেশের ইলিশ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার সময় দেশের জেলেরা মাছ শিকার বন্ধ রাখলেও ভারত ও মিয়ানমারের জেলেরা আমাদের জলসীমায় মাছ শিকার করেছে। তাই ইলিশ মাছের উৎপাদন রক্ষা করা সেইভাবে সম্ভব হয়নি। যদি ইলিশ এবং সমুদ্রসীমা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যেত তাহলে আরো বেশি মাছ পাওয় যেত। তারপরও নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। তাই বাজারে দামও একটু কমেছে। দেশের মানুষ সাড়ে তিনশত থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে ইলিশ কিনতে পারছে। যদি সমুদ্রসীমা রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে সারা বছরই আমাদের দেশের মানুষ কম দামে ইলিশ কেনার সুযোগ পাবে। ইলিশ সম্পদে আমরা যেন আরো সমৃদ্ধ হতে পারি তার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতেই হবে।