ইলিশ সম্পদ রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে

ইলিশ সম্পদ রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে
বঙ্গপ সাগরে ইলিশ শিকারে চলছে নিষেধাজ্ঞা। দুই মাস পাঁচ দিনের ওই নিষেধাজ্ঞা মানতে রাজী হচ্ছে না জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গভীর সমুদ্রে চলছে ইলিশ শিকার। আর সেই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে বরিশাল ইলিশ মোকামে। জেলেদের দাবি এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। এই সময় ইলিশ শিকার বন্ধ থাকলে জেলেরা ক্ষতির সম্মুখিন হবেন। তাই তারা নিষেধাজ্ঞা মানতে পারছেন না। গত দুই মাস মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার অভয়াশ্রমে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রাখে সরকার। ওই নিষেধাজ্ঞা উঠলেও গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে ইলিশ শিকার বন্ধ করা হয়েছে। ইলিশ সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সময় কোনভাবেই সাগরে ইলিশ মাছ শিকার করা যাবে না। কোন জেলে ইলিশ শিকারের সঙ্গে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরও কেন ইলিশ মাছ শিকার চলছে? কেন জেলেরা সরকারের সিদ্ধান্ত মানতে পারছে না? আমরাও চাই, ইলিশসহ মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধিতে ইতিবাচক উদ্যোগ থাকুক। জেলেদের অভিযোগ, তারা ইলিশ ধরা বন্ধের সময় কোন প্রনোদোনা পাচ্ছেন না। সরকার বারবার প্রনোদনার কথা বললেও বাস্তবে তার সিকিভাগও জেলেদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। তাই তারা ইলিশ শিকার বন্ধ করতে পারছে না। কারণ তাদের জীবিকাই চলে মাছ শিকার করে। সেটেম্বরের শেষ সপ্তহ থেকে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ পর্যান্ত ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে। এ ছাড়া বছরের প্রায় ৮ মাস জাটকা অভিজান থাকে। তখনও জেলেরা মাছ শিকার করতে পারে না। নতুন করে আবার দুই মাসের বেশি সময় সাগরের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতাশ জেলেরা। সত্যিকার অর্থে ইলিশ সম্পদের বৃদ্ধি করতে হলে নিষেধাজ্ঞা মানতে বাধ্য করতে হবে। একই সঙ্গে জেলেরা নিষিদ্ধ সময় যেন বিকল্প কাজ করে জিবিকা নির্বাহ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে কেবল নিষেধাজ্ঞা জারী হবে আর জেলেরাও মাছ শিকারে যাবে। কিছু অভিযানের নামে অর্থ ব্যয় হবে। মাছ নির্ভর জেলেদের জেল জরিমানা হবে। কিন্তু ইলিশ সম্পদ বৃদ্ধি পাবে না। আর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে মাছ শিকার করে একদল কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করবে। সেই বাণিজ্যের ভাগিদারও হবেন না জেলেরা। বঙ্গপ সাগরে মাছ ধরা বন্ধের মধ্যে একদিনে বরিশাল ইলিশ মোকামে দেড় হাজার মন মাছ বিক্রি হয়েছে। অথচ নিষেধাজ্ঞা না থাকার সময় মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ মন মাছ বিক্রি হয়েছে বরিশাল মোকামে। এই হিসেব দেখার পরও কি মনে হবে ইলিশ সম্পদ বৃদ্ধির উদ্যোগ বাস্তবায়ন হচ্ছে? হচ্ছে না। হবেও না। কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। জেলেদের বিকল্প জিবিকার পথ দেখিয়ে আশ^স্ত করতে হবে। তাহলেই আমাদের ইলিশ সম্পদ বৃদ্ধি পবে। সরকার সেই উদ্যোগ নিক। আর মৎস্য অধিদপ্তর নয়, দেশের সব পর্যায়ের নাগরিকরা এই কাজে সহযোগিতা করুক। তাহলেই সফল হবে উদ্যোগ।