উত্তাল সাগর থেকে ১২ নাবিক উদ্ধার

উত্তাল সাগর থেকে ১২ নাবিক উদ্ধার

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উত্তাল সাগরে ডুবে যাওয়া পাথরবোঝাই 'এমভি সানভ্যালি ৪' নামের লাইটারেজ জাহাজের ১২ নাবিক ও ক্রুকে জীবিত উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। টানা ২ ঘণ্টা সাগরে তল্লাশির পর তাদের শনাক্তের পর উদ্ধার করে নিয়ে আসে বিমান বাহিনীর ২টি রেসকিউ হেলিকপ্টার।

বুধবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে তাদের বঙ্গোপসাগরের নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরের কাছাকাছি ৯ নম্বর বয়া, নতুন চ্যানেল আক্তার বানু ডোবা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। দুপুর ২টার দিকে তাদেরকে চট্টগ্রামে বিমান বাহিনীর জহুরুল হক ঘাটিতে নিয়ে আসা হয়।

এর আগে সকালে জাহাজডুবির খবর পেয়ে উদ্ধার অভিযানে বিমান বাহিনীর সহযোগিতা চায় নৌ বাহিনী। সেই চাহিদামতে উদ্ধার অভিযানে নামে বিমান বাহিনী।

জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম থেকে পাথর নিয়ে ঢাকায় যাত্রা করে 'এমভি সানভ্যালি ৪' নামে একটি লাইটারেজ জাহাজ। কিন্তু রাত ১১টার দিকে প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে জাহাজের বিভিন্ন অংশ ভেঙে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারানো জাহাজটি ক্রমশ ডুবতে শুরু করলে নাবিকরা প্রাণ বাঁচানোর আকুতি করতে থাকে। সাগর উত্তাল থাকায় উদ্ধারের জন্য আশেপাশে কোনও জাহাজও ছিল না। পরে নৌ বাহিনী তথ্য পেলে তাদের উদ্ধারের জন্য বিমান বাহিনীর সহায়তা চায়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে আসে বিমান বাহিনীর ২টি হেলিকপ্টার। উত্তাল সাগর থেকে একে একে উদ্ধার করা হয় ১২ জনকে।

জাহাজটির নাবিক আশরাফ বলেন, গতকাল বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রামের মাঝিরঘাট থেকে পাথর বোঝাই করে ঢাকার হাসনাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় লাইটারেজ জাহাজটি। পথিমধ্যে সাগরের ৯ নম্বর বয়া, নতুন চ্যানেল আক্তার বানু ডোবা এলাকায় পৌঁছলে রাত ৮টার দিকে ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজটি। প্রচণ্ড বাসাত ও ঢেউয়ের তোড়ে জাহাজে পানি প্রবেশ করে। এ সময় ৯ নম্বর ভয়াতেই অবস্থান করে উদ্ধার সহযোগিতা চাওয়া হয়।

তিনি বলেন, এরকম অনিশ্চিয়তার মধ্যদিয়ে উত্তাল মধ্যসাগরে রাত পার করার পর সকালে খবর পাই বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার উদ্ধারে আসবে। এরপর বুধবার ১টার দিকে বিমান বাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার আমাদের ১২ জনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। বর্তমানে আমরা সবাই সুস্থ আছি আর বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতেই আছি।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার সাইফুল আলম জানান, বিমান বাহিনীর চট্টগ্রাম জহুরুল হক ঘাঁটিতে হেলিকপ্টারে আনার পর প্রথমে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা হয়েছিল অ্যাম্বুলেন্স এবং চিকিৎসক। জাহাজ ডুবে যাওয়ার পর দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টা ধরেই তারা সাগরে ভাসছিল। এমনকি বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন তারা।

জীবিত উদ্ধার হওয়া ১২ জনকে বর্তমানে বিমান বাহিনীর তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে চিকিৎসা শেষে জাহাজ মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।