করোনা মোকাবেলায় সমন্বিত জাতীয় কমিটি গঠন করার দাবি

করোনা মোকাবেলায় সমন্বিত জাতীয় কমিটি গঠন করার দাবি

প্রাণঘাতী কোভিড-১৯, করোনা ভাইরাস মোকাবেলার সামাজিক দুরুত্বের কারণে দেখা যাচ্ছে অনেকেই নিজে থেকেই সরে রয়েছেন। তাই সামাজিক দুরত্ব নয় শারীরিক দুরুত্ব বজায় রেখে করোনা মোকাবেলায় সমন্বিত জাতীয় কমিটি গঠন করার দাবি করেছে বরিশালের নাগরিকরা। সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ওই আহ্বান জানান বক্তারা।


 রোববার বেলা ১১টায় নগরের প্রশাসনসহ সকল দলের সমন্বিত হয়ে নগরীর খেটে খাওয়া নি¤œ আয়ের মানুষসহ অসহায়, দুস্থ ও বস্তিবাসীদের পাশে দাঁড়াবার জন্য ওই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা কমিটি।


বাসদ বরিশাল জেলা কমিটির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার ইমনান হাবীব রুমনের সঞ্চলনায় উন্মুক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বরিশালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর এইচ.এন সরকার, বরিশাল জেলা বিএিনপি (দক্ষিণ) সভাপতি আলহাজ্ব এবায়েদুল হক চাঁন, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল হক নিলু, মাক্সবাদী দল বরিশাল জেলা আহবায়ক সাইদুর রহমান, বরিশাল উদীচী সভাপতি সাংবাদিক সাইফুর রহমান মিরণ, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বরিশাল শাখার সদস্য শেখ সুমন ও তরুন স্বোচ্ছাসেবী সংগঠন লাল-সবুজ সোসাইটির সদস্য কামরুন নাহার মোহনা, অপূর্ব গৌতম, কাজল।


উন্মুক্ত আলোচনায় মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এইচ.এন সরকার বলেছেন, আমাদের বর্তমান এই পরিস্থিতিতে মানুষকে করোনা সম্পর্কে অবহিত করার মাধ্যমে তাদেরকে সচেতন করতে হবে। পাশাপশি শারীরিক দুরুত্ব বজায় রেখে মানুষের মনের ভয় দূর করতে কাজ করতে হবে। আমাদের লকডাউন করে বসে থাকলে চলবে না। কারা খাবার পাচ্ছেন না সেবিষয়ে খোঁজ নিয়ে তাদের মাঝে খাবার বন্টন করতে হবে। মনে রাখতে হবে দারিদ্রদের ক্ষুদা করোনার চেয়ে ভয়ংকর। ক্ষুদার্ত ব্যক্তিদের শাসন দিয়ে আটকে রাখা যাবে না। তাই সমন্বিতভাবে সকলকে এক হয়ে কাজ করলে এর কিছুটা সমাধান করা সম্ভব।


তিনি আরো বলেন, কোনভাবেই রোগকে আড়াল করা যাবে না। যার যার যে সমস্যা আছে সেগুলো চিকিৎসকের কাছে পরিস্কারভাবে তুলে ধরতে হবে।
বরিশাল জেলা বিএনপি সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁন বলেন বর্তমান করোনা সংকটময়কালে জাতীয় প্রর্যায়ে থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা ও থানা প্রর্যায়ে সকলকে নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। একক বা পৃথকভাবে কাজ করে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন।
ওয়াকার্স পার্টি বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল হক নিলু বলেন. যতই মানুষকে গৃহবন্দী করে রাখা হবে ততই খাদ্য সংকট দেখা দেবে। মানুষের পেটে ভাত না থাকলে সে তো বেঁচে থাকার জন্য রাস্তায় নামবেই। করোনা মোকাবেলার সঙ্গে সঙ্গে মানুেেষর খাবারের নিশ্চতা প্রদান করতে হবে। শুরুতেই প্রশাসনিকভাবে এই কার্যক্রম চালু করার প্রয়োজন ছিল।


তরুন সংগঠন লাল সবুজের সদস্য কামরুন নাহার মোহনা বলেন করোনার কারনে আকস্বিকভাবে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবার কারনে সেসকল প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা মালিক থেকে শুরু করে কারো কাছ থেকে কোন ধরনের আর্থিক ও খাদ্য সহযোগীতা পায়নি।

তারা চাইতে পারছে না। কারো কাছে মুখ ফুটে বলতে না পারার কারনেই কিছুই পাচ্ছে না। অন্যদিকে প্রশাসনের হট লাইন সম্পর্কে সমলোচনা করে বলেন পরের কথা কি ভরব আমি নিজেই আমার এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরার জন্য বহুবার চেষ্টা করেছি রিং হলে কেহ ধরে না নতুবা বিজি থাকে। 


 মোহনা প্রশাসনের হটলাইনটি শতভাগ রিসিভ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান। সেই সাথে হাসপাতালে কােনার দোহাই দিয়ে চিকিৎসকরা সাধারন রোগীদের নাজেহাল ও হেনস্তা করার অভিযোগ রয়েছে।


এসময় বাসদ বরিশাল জেলা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, আমরা করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার শুরুতেই সভা সমাবেশের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে আধুনিক করার প্রস্তাব সহ সতর্ক করার চেষ্টা করেছি। তখন আমাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা হয়েছে। আমরা আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে নগরীর বিভিন্নপ্রান্তে ঘুরে ঘুরে ১০ হাজার হ্যান্ডওয়াস তৈরি করে বিতরণ করেছি। সেই সঙ্গে ১মুঠো চালের কর্মসূচি এবং মানবতার বাজারের মাধ্যমে দুস্থ আসহায় মানুষের মাঝে সেবা প্রদান করার কাজ চলছে। এই কাজে সবার এগিয়ে আসা দরকার। তাই সমন্বিত একটা উদ্যোগ নিয়ে আগামীতে করোনা মোকাবেলায় কাজ করতে হবে। সেই কাজে প্রশাসনসহ সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে যুক্ত করার প্রয়াস রয়েছে।


এই করোনা পরিস্থিতির সংকটময়কালে সাধারণ অসহায় মানুষের জন্য রেশনিং প্রদ্ধতি চালু করার পাশাপাশি চিকিৎসকদের সুরক্ষার মাধ্যমে রোগীদের সেবা দিতে তার ব্যবস্থা করার আহবান জানান।