কসোভো-সার্বিয়া উত্তেজনা, হস্তক্ষেপে ন্যাটো

কসোভো-সার্বিয়া উত্তেজনা, হস্তক্ষেপে ন্যাটো

কসোভোতে মোতায়েনকৃত ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা কসোভোর পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করছে এবং স্থিতিশীলতা বিপন্ন হলে তারা হস্তক্ষেপের জন্য প্রস্তুত। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এখবর জানিয়েছে।

কসোভোর সার্বিয়া সীমান্তের কাছে উত্তরাঞ্চলীয় পৌরসভার সার্ব জাতিগোষ্ঠী সড়ক অবরোধ করেছে এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়েছে। নতুন একটি আইনের প্রতিবাদে তারা এই বিক্ষোভ করেন। নতুন আইন অনুসারে, তাদেরকে নিজেদের লাইসেন্স প্লেট কসোভোর প্লেট দিয়ে স্থলাভিষিক্ত করতে হবে।

সোমবার থেকে নতুন এই আইন কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইনটি কার্যকর বিলম্বিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই আইন কার্যকর হলে কসোভোতে প্রবেশের জন্য সার্বিয়ার নাগরিক হিসেবে পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট দেখিয়ে একটি নথি সংগ্রহ করতে হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল কার্যকরের তারিখ পিছিয়ে দিতে কসোভোর সিদ্ধান্তের প্রশংস করেছেন। তিনি সড়ক অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।

কসোভো পুলিশ জানিয়েছে, সোমবারের বিক্ষোভে কেউ আহত হয়নি। যদিও বেশ কয়েকটি স্থানে গুলির শব্দ শোনা গেছে। কিছু গুলি করা হয়েছে পুলিশ ইউনিটকে লক্ষ্য করে। বিক্ষোভকারী ট্রাক ও ভারী যন্ত্রাংশ রাস্তায় ফেলে দুই সীমান্তের ক্রসিং বন্ধ করে দেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া জাতীয়তাবাদী ও সংশোধনবাদী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি অঞ্চলটিতে সমর্থন পাচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুচিক, বসনিয়ার সার্ব নেতা মিলোরাড দদিক ও হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান।

সার্বিয়া সাধারণভাবে রুশ মিত্র। ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে সাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে দেশটি। রাশিয়া ও চীন এখনও কসোভোকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এমনকি সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর যুদ্ধের নিন্দা জানিয়েছে। ১৯৯৯ সালে ন্যাটো জোট একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছিল। স্বাধীনতার জন্য লড়াইরত কসোভার আলবেনিয়ান জাতিগোষ্ঠীর ওপর সার্বিয়া নিপীড়ন বন্ধে এই অভিযান চালায় ন্যাটো।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নারী মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা রবিবার কসোভোর নতুন আইনের সমালোচনা করেছেন। তিনি এই আইনকে সার্বিয়ার জনগণকে উচ্ছেদের একটি পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।

জাখারোভা বলেন, আমরা প্রিস্টিনা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে উসকানি বন্ধ ও কসোভোতে সার্বদের অধিকার রক্ষার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

এক সংবাদ সম্মেলনে সার্ব নেতা ভুচিক বলেছেন, তারা যদি সার্বদের নিপীড়ন ও দুর্ব্যবহারের সাহস দেখায়, তাহলে সার্বিয়া জিতবে।

কসোভোর প্রধানমন্ত্রী আলবিন কুর্তি অভিযোগ করেছেন সার্ব নেতা সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন।