খোলা আকাশের নিচে আড়াই হাজার রোহিঙ্গা

কক্সবাজারের উখিয়ার শফিউল্লাহ কাটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন দিনযাপন করছে আড়াই হাজারের অধিক রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা।
তবে দ্রুত রোহিঙ্গাদের শেল্টার নির্মাণ করে দেওয়াসহ সমস্যা সমাধানে কাজ করার কথা জানিয়েছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এই কমিশন।
সূত্র জানায়, আগুন লাগার পর কোনো রকম পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদ আশ্রয় গিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন রোহিঙ্গারা। বসতি ছাই হওয়ার পাশাপাশি পুড়ে গেছে কাপড়চোপড়, আসবাবপত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী। সকাল না হতে আত্মরক্ষার্থে যাওয়া রোহিঙ্গারা ফিরছেন সেই পুড়ে যাওয়া বসতিতে। পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া বসতিতে খুঁজে বেড়াচ্ছেন কিছু পাওয়া যায় কিনা।
সোমবার সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় সাবেকুন নাহার বলেন, ‘হঠাৎ আগুনের লেলিহান শিখা দেখে বাচ্চাদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। ফ্রিজ, রাইচ কুকারসহ বাড়ির সব পুড়ে নিঃস্ব অবস্থায় আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।’
৮ নম্বর এপিবিএন এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার শিহাব কায়সার খান বলেন, চুলার আগুন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। সাড়ে ৫টায় আগুন লাগার খবর পেয়ে উখিয়া, টেকনাফ, চকরিয়া ও কক্সবাজার সদর হতে ৮টি ফায়ার ইউনিট সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে আনুমানিক অর্ধশত কোটি টাকার অধিক পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে রোহিঙ্গা নিবাসের পাশাপাশি পুড়েছে স্থানীয় ডজনাধিক বসতিও। প্রচণ্ড শীতে বসতি হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে দিন কাটছে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় পরিবারগুলোর। শীতের কাপড়, খাদ্য ও পানি সংকটে চরম কষ্টে রয়েছেন তারা।
আইওএম এর ন্যাশনাল কমিউনিকেশন অফিসার তারেক মাহমুদ বলেন, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তা ঠিক করার পর সমন্বয় করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শামছু দ্দৌজা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রবিবার বিকেল ৫টার দিকে ৮ এপিবিএনের আওতাধীন রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৬ শফিউল্লাহ কাটা বি, সি ব্লকে আগুন লাগে। মুহূর্তে আগুনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে আগুনে পুড়ে প্রায় ৬০০টি শেড।