জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের কাছেই থাকা উচিত: কেএম নূরুল হুদা

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের কাছেই থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিইসি কে এম নূরুল হুদা।
গতকাল শনিবার দুপুর ২টায় বরিশাল সার্কিট হাউজে ‘পৌর এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত’ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
সিইসি বলেন, বিশে^র বিভিন্ন দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হোম মিনিস্ট্রিতে, কোথাও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবার কোথাও আলাদা অধিদপ্তরে রয়েছে। এনআইডি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের মতামত প্রতিবেদন আকারে সরকারের কাছে জমা দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দেশের ৪২জন বিশিষ্ট নাগরিকের দুর্নীতি অভিযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, অভিযোগকারীদের পিপিআর এবং পিপিই (সরকারি কেনাকাটা) আইনের বিষয়ে কোন ধারণা নেই। তাদের সবগুলো অভিযোগ মিথ্যা এবং অসত্য। রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে তারা এসব অভিযোগ করেছেন।
২১ জুনের নির্বাচনের বিভাগে ২৬জন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে সিইসি বলেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোন ভূমিকা নেই। কে প্রার্থী হবেন বা না হবেন এগুলো নির্বাচন কমিশনের বিষয় নয়। নির্বাচন কমিশন হলো নির্বাচন অনুষ্ঠানের ম্যানেজার। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে মাত্র।
এর আগে বরিশাল সার্কিট হাউজে ‘পৌর এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত’ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি বলেন, বরিশালসহ যেসব এলাকায় করোনা সংক্রামণ কম সে রকমের ২০৮টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন আগামী ২১ জুন নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে করোনা সংক্রামণ বেশী হওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে খুলনা অঞ্চলের ১৬৩টি স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। করোনার কারণে এর আগে একদফা নির্বাচন পেছানো হলেও সংক্রামন তুলনামূলক কম হওয়ায় বরিশাল এবং মাদারীপুর অঞ্চলে বৃষ্টি মৌসুমেও নির্বাচন চালিয়ে যেতে হবে।
আগামী ২১ জুন বরিশাল জেলার ৫০টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ১৬০জন, সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থী ৫১৫জন এবং সাধারন ওয়ার্ডে সদস্য প্রার্থী ১ হাজার ৬শ’ ২৩ জন। বরিশালের ১০ উপজেলার মধ্যে ৯টি উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে নদী বেষ্টিত মেহেন্দিগঞ্জ, হিজলা ও মুলাদী ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব কেন্দ্রে প্রয়োজনীয়সংখ্যক কোস্টগার্ড মোতায়েনের নির্দেশনা দেন সিইসি। জেলার ৫০ ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ৪৬৯টি এবং ভোটার ৯ লাখ ১৮ হাজার ৭৬৩জন।
বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল, মেট্রো পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান, নির্বাচন কমিশন সচিবালায়ের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান এবং বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ।
সভায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশগ্রহন করেন।