জামাতার জামিনে সাফাই দিতে গিয়ে ফাঁসলেন শ্বশুর

জামাতার জামিনে সাফাই দিতে গিয়ে ফাঁসলেন শ্বশুর

নিজ মেয়ে হত্যার ঘটনায় জামাতাকে আসামি করে মামলা দায়েরের প্রায় দুই বছর পর সেই জামাতার জামিনের পক্ষে সাফাই দিতে এসে ফেঁসে গেলেন জলিল দুয়ারি।

জামাতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিলো বলে দাবি করায় শ্বশুরের বিরুদ্ধেই মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আসামি জামাতা মো. কাউসার গাজীকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসাদ মিয়া। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্যাহ।

বশির উল্যাহ বলেন, মেয়েকে হত্যা করার ঘটনায় জামাতাকে প্রথমে আসামি করে মামলা করেন শ্বশুর। তবে দুই বছর পরে এসে সেই মামলা মিথ্যা বলে হলফনামা দেন। সেই হলফনামা নিয়ে কারাগারে থাকা মেয়ের জামাই কাউসার জামিনে মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে কাউসারের জামিন মঞ্জুর করেন এবং শ্বশুর জলিল দুয়ারির বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পটুয়াখালী এলাকার সাথী আক্তার নামের এক নারীকে তার স্বামী মোহাম্মদ কাউসার গাজী নির্মমভাবে হত্যা করেন বলে অভিযোগ করে সাথীর পরিবার।

এ ঘটনায় পটুয়াখালীর সদর থানায় নিহত সাথী আক্তারের বাবা জলিল দুয়ারি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় আসামি কাউসার গাজীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় আদালত।

পরে ওই ঘটনায় নিহত সাথীর কন্যাশিশু (৫) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে সে বলে, আমার আম্মুকে আব্বু লাঠি দিয়ে মাথায় এবং দাদা শরীরে আঘাত করে হত্যা করে। পরে ছাগলের রশি দিয়ে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে। ময়নাতদন্তেও আঘাতের ফলে মৃত্যুর বিষয়টি প্রমাণিত হয়।

কিন্তু দুই বছর পর এসে জলিল দুয়ারি এফিডেভিট সহকারে হাইকোর্টকে জানান, তিনি প্ররোচিত হয়ে এ হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় কাউসার গাজীকে অব্যাহতি দিয়ে জামিন দিলে তার কোনো আপত্তি নেই।

এ সময় শুনানিকালে হাইকোর্ট বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করা ঠিক হয়নি অথবা মিথ্যা এফিডেভিট দিয়ে আসামির জামিনে সহযোগিতা করাও তার ঠিক হয়নি।

এ ঘটনায় পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সেজন্য আদালত বলেন, প্রায়ই জামিন পাওয়ার জন্য আসামিপক্ষ এ ধরনের প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে জামিনের চেষ্টা করে। এ ধরনের ঘটনা বন্ধ হওয়া উচিত। তাই এ ঘটনায় মামলার বাদী জলিল দুয়ারির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেয়া হল।