ম্যাচের প্রথম ইনিংস অর্থাৎ ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ হতেই যেন লেখা হয়ে গেল ম্যাচের ফল! আফগানিস্তানের সামনে ৩৯৮ রানের পাহাড় লক্ষ্য। ইতিহাস গড়ে এই লক্ষ্য টপকাবে আফগানিস্তান? ক্রিকেট মহা অনিশ্চয়তার খেলা হতে পারে। তাই বলে আফগানিস্তানের পক্ষে বাজি ধরার লোক ছিল না নিশ্চয়ই।
ম্যাচের ফলটাও হলো অনুমিতই। স্বাগতিক ইংল্যান্ড তুলে নিল ১৫০ রানের বিশাল এক জয়। যে জয়ে অস্ট্রেলিয়াকে দুইয়ে ঠেলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠে গেল ইংলিশরা। ওল্ড ট্রাফোর্ডে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ৩৯৭ রান করে ইংলিশরা। জবাবে আফগানিস্তান থেমেছে ৮ উইকেটে ২৪৭ রানে।
মঙ্গলবারের ম্যাচটায় যতটা দাপট দেখিয়েছে ইংল্যান্ড, ঠিক ততটাই দাপট ছিল মরগানের। তাই এক অর্থে এই ম্যাচকে মরগানময় ম্যাচই বলা যেতে পারে। তার ৭১ বলে করা ১৪৮ রানের টর্নেডো ইনিংসে রানের পাহাড়ে চড়ে ইংল্যান্ড। ৪টি চারের সঙ্গে ১৭টি ছক্কা হাঁকান এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান।
ইংলিশ অধিনায়ক গড়েছেন একাধিক রেকর্ড। ১৭টি ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়ানডেতে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ছক্কার মালিক এখন তিনি। ৫৭ বলে পূরণ করেন সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে যা দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তি।
মরগানের মতো ছক্কার রেকর্ড গড়েছে ইংল্যান্ডও। ২৫টি ছক্কা মেরেছে ইংলিশরা। ওয়ানডেতে এক ম্যাচে কোনো দলের যা সর্বোচ্চ। পরে আফগানদের ছক্কা মিলে মোট ৩৩টি ছক্কা হয়েছে ম্যাচে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া ইংল্যান্ডের এদিনের সংগ্রহই বিশ্বকাপের এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এই মাঠেও সব মিলে যা রেকর্ড সংগ্রহ।
মরগান দারুণ সঙ্গ পেয়েছেন জো রুটের কাছ থেকে। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে যোগ করেন ১৮৯ রান। বিশ্বকাপে যা ইংলিশদের সর্বোচ্চ জুটি। রুট ৮২ বলে ৮৮ রান করেন ৫ চার ও ১ ছক্কায়।
এর আগে জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১২০ রান যোগ করেন রুট। বেয়ারস্টোর ব্যাট থেকে আসে ৯০ রান। শেষ দিকে মইন আলি ৯ বলে ৩১ রানের ছোট্ট ঝড় বইয়ে দিলে চার শ ছোঁয়া স্কোর গড়ে ইংলিশরা।
স্বাভাবিকভাবেই আফগানর বোলাররা ছিলেন কোণঠাসা। অবশ্য ৩টি করে উইকেট পেলেন দৌলত জাদরান ও গুলবাদিন নাইব। রশিদ খান ৯ ওভার বল করে ১১০ রান খরচ করে লজ্জার রেকর্ড গড়লেন। বিশ্বকাপে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড এখন তার। এ ছাড়া ১১টি ছক্কা খেয়েছেন তিনি। ওয়ানডেতে কোনো বোলারের বলে যা সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড।
বড় লক্ষে খেলতে নেমে মাত্র ৪ রানেই ওপেনার নুর আলি জাদরানকে হারায় আফগানরা। এরপর গুলবাদিন নাইব, রহমত শাহ, আসগর আফগানরা ইংলিশ বোলারদের সামলে খেলে সম্মানজনক পরাজয়ের পথ খুঁজলেন। হাসমতউল্লাহ শহীদির কথা যেখানে আলাদা করে বলতে হয়।