দেশে জর্দা-গুল ব্যবহারকারী ২ কোটি ২০ লাখ

দেশে জর্দা-গুল ব্যবহারকারী ২ কোটি ২০ লাখ

অনিয়ন্ত্রিত উৎপাদন ব্যবস্থাই ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যের কর আহরণে বড় বাধা। বাংলাদেশে ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য উৎপাদনকারীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সরকারের কর জালের বাইরে রয়েছে। বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২০ দশমিক ছয় শতাংশ অর্থাৎ দুই কোটি ২০ লাখ মানুষ ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন। এ ছাড়া ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী বিদ্যালয়গামী শিশুদের মধ্যে চার দশমিক পাঁচ শতাংশ জর্দা-গুল ব্যবহার করে থাকে।

সম্প্রতি ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর সহায়তায় ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য উৎপাদনকারীদের কর জালের বাইরে থাকার কারণ এবং এ ক্ষেত্রে করণীয় বিষয়ে জানতে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে ৪৮৩টি জর্দা ও গুল কারখানার মধ্যে কর দেয় মাত্র ২১৮টি।

সোমবার প্রজ্ঞা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে। ফ্যাক্টরস ইনহাইবিটিং স্মোকলেস টোব্যাকো ট্যাক্স পেইমেন্টস বাই স্মোকলেস টোব্যাকো ম্যানুফ্যাকচারার্স অপারেটিং আউটসাইড দা ট্যাক্স নেট ইন বাংলাদেশ শীর্ষক গবেষণায় এমন চিত্র দেখা গেছে। ফলাফল তুলে ধরতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে একটি ওয়েবিনার আয়োজন করে তামাকবিরোধী সংগঠন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, উবিনীগ, ভয়েস এবং প্রজ্ঞা।

গবেষণার সার্বিক ফলাফলে দেখা গেছে, দেশে ৪৩৫টি জর্দা কারখানা এবং ৪৮টি গুল কারখানার মধ্যে মাত্র ২১৮টি জর্দা ও গুল কারখানা কর প্রদান করে। আটটি বিভাগের ২৯টি জেলায় কর জালের বাইরে থাকা ৮৮ জন ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য উৎপাদনকারীর (৮১ জর্দা এবং সাত গুল) মধ্যে ৩৩ শতাংশের বৈধ ট্রেড লাইসেন্স নেই। ৯১ শতাংশ উৎপাদনকারী যন্ত্রের সাহায্য ব্যতীত হাতে ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য উৎপাদন করেন। সাধারণত বাড়িতে বা ক্ষুদ্র পরিসরে স্থাপিত কারখানায় এসব তামাক পণ্য উৎপাদিত হয়। এসব কারখানায় মোট মাসিক গ্রস টার্নওভারের পরিমাণ দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা।

গবেষণায় অনানুষ্ঠানিক উপায়ে ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য উৎপাদনকেই ট্যাক্স কমপ্লায়েন্সের অন্যতম বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও এনবিআরের দক্ষ জনবলের সংকট, মাঠ পর্যায়ের অবকাঠামো এবং সনাতন সরঞ্জাম ও পদ্ধতি এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্স রিটার্ন ব্যবস্থার অনুপস্থিতি এবং শক্তিশালী ট্র্যাকিং ও ট্রেসিং পদ্ধতি অভাবে এ খাতে উৎপাদনকারীরা কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ পায়।