নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন প্রতিরোধে পরিবার থেকে ভূমিকা নিতে হবে

নারী ও শিশুরা ঘরে বাইরে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হয়। নারী শিশুরা বেশি নির্যাতনের শিকার হয় নিকট আত্মীয় দ্বারা। অনেক নারী শিশু ঘরের ভেতর যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। এমনসব স্বজন দ্বারা যৌননির্যাতরেন শিকার হয় তা মুখ খুলে বলতেও পারে না। তাই নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হলে পারিবারিকভাবে বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে। এর সঙ্গে নীরবতা ভেঙে আওয়াজ তুলতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে এব্যাপারে শুন্য সহনশীল নীতি অনুসরণ করতে হবে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নগরের রিভারভিউ রেস্টুরেন্টের হলরুমে অুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় নারী ও শিশুর প্রতি সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ব্রাকের সহযোগিতায় ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বরিশালে নারী ও শিশুর প্রতি জে-ার ভিত্তিক নির্যাতন প্রতিরোধে পুরুষ ও কিশোরদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সুরক্ষা কমিটির সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বক্তারা।
বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এসএম ইকবালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় প্রধান অতিথি ছিলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. জাকির হোসেন মজুমদার। বিেেশষ অতিথি ছিলেন, শিশু সংগঠক ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা পংকজ রায় চৌধুরী, বরিশাল বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক জালিস মাহমুদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, উন্নয়ন সংগঠক আনোয়ার জাহিদ, রণজিত দত্ত, শিশু সংগঠক শুভংকর চক্রবর্তী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক স্বপন খন্দকার, সুশান্ত ঘোষ, ব্যবসায়ী মো. আক্তার হোসেন, ওয়াল্ড ভিসন প্রতিনিধি সুরভী বিশ^াস, ব্রাক প্রতিনিধি বিভাস চন্দ্র কর্মকার, আয়োজক সংগঠক ফিরোজ মোস্তফা, সোহানুর রহমান প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে। নারী ও শিশুরা সমাজে নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। বর্তমান করোনা মহামারীর সময় নারী ও শিশুরা বাড়িতে বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এই সময় মানুষের পশুবৃত্তির মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। নারী ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- আইন পাশ হলেও ধর্ষণ কিংবা নারী শিশু নির্যাতন কমেনি। মূলত আইন দিয়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন পারিবারিক মূল্যবোধ। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হলে আগে পরিবার থেকে ভূমিকা নিতে হবে। নারী ও শিশুকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে। এজন্য মানুষের মধ্যে দৃঢ় প্রত্যয় ধারণ করতে হবে। আর সেই কাজে সবচেয়ে বেশি উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে পুরুষদের। নারী-পুরুষ সমানভাবে এগিয়ে যেতে হলে একজন অন্যজনের সহযোগী হতেই হবে।
বক্তারা আরো বলেন, নারী নির্যাতন বন্ধে কিছু মানুষ আওয়াজ তোলেন, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ এই আন্দোলনে যুক্ত হন না। এব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সবার প্রতি সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে। একই সঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রেও সংবেদনশীল আচরণ করা জরুরী বলে মনে করেন বক্তারা।