নার্স শাহিনুর ধর্ষণ ও হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ

নার্স শাহিনুর ধর্ষণ ও হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ
ঢাকা ইবনেসিনা হাসপাতালের নার্স কিশোরগঞ্জ কটিয়াদির বাসিন্দা শাহিনুর আক্তারকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। শাহিনুর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি তুলে বরিশালে মানববন্ধন করেছে সর্বস্তরের মানুষ। দাবি আদায়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরের অশি^নী কুমার হল সম্মুখ সড়কে সম্মিলিত নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আন্দোলন বরিশালের ব্যানারে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ মহলা পরিষদ বরিশাল জেলার সভাপতি রাবেয়া খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, টিআইবির উদ্যোগে গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ শাজেদা, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পুষ্প রাণী চক্রবর্তী, উন্নয়ন সংগঠক আনোয়ার জাহিদ, কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু, রফিকুল ইসলাম, বরিশালের ২৭টি সংগঠনের জোট বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু কর, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবা তত্তাবধায়ক সেলিনা পারভীন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবা তত্তাবধায়ক মলিনা ম-ল, স্বাধীনতা নাসের্স পরিষদ পটুয়াখালী জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক কাওসার মাহমুদ, বরিশাল থিযেটার সভাপতি শুভংকর চক্রবর্তী। মানববন্ধনে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠন ছাড়াও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন, রাজধনী নার্সিং কলেজ, জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউটের কয়েকশত নার্স ও শিক্ষার্থী অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নারী ও শিশুরা কোথাও নিরাপদ নয়। গণ পরিবহণে বাড়ি ফিরতে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের শিকার হন নার্স শাহিনুর আক্তার। ধর্ষণের পর শাহিনুরকে নির্মমভাবে হত্যা করে ধর্ষকরা। মূলত বিচারহীনতার সংস্কৃতি নারী ও শিশু নির্যতন এবং ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে। ধর্ষকদের ফাঁসি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন না করলে এই ঘটনা কমবে না। এক একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে আর তদন্ত কমিটি গঠন করার মধ্যে বিচার থেমে থাকে। দ্রুত শাহিনুর ধর্ষণ ও হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেন বক্তারা। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান আন্দোলনকারীরা। সেখানে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মরকলিপি দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ঢাকা ইবনেসিনা হাসপাতালের নার্স শাহিনুর আক্তার গত সোমবার কাজ শেষ করে স্বর্ণলতা পরিবহন নামে একটি বাসে গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি যাচ্ছিল। চলন্ত বাসে তাকে ধর্ষণ করে বাসের চালক নুরুজ্জামান নুরু, চালকের সহকারী লালন মিয়া, গাজীপুর কাপাশিয়ার ভেঙ্গরদি গ্রামের বাসিন্দা আলআমিনর, লোহালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম, কটিয়াদির ভোগপাড়া গ্রামের কোখন মিয়া। ধর্ষণের পর তারা ভারী কিছু দিয়ে শাহিনুরের মাথায় আঘাত করা হয়। এতে শাহিনুরের মাথার খুলি ফেটে মস্তিস্কে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় শাহিনুরের বাবা বাদি হয়ে বাজিতপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় বাস চালক, চালকের সহকারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শাহিনুর ধর্ষণ ও হত্যার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে তা থানায় হস্তান্তর করেছেন কিশোরগঞ্জ জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক সজীব কুমার।