পুলিশের পক্ষে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হওয়া সম্ভব

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘জেলার প্রতিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) হবেন তার এলাকার হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। ওসি হতে পারেন ওই থানার সামাজিক নেতা। মানুষ তাকে ভালোবাসবে, তার কথা শুনবে। তার ফোর্সকে ভালবাসবে। পুলিশের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিট পুলিশের কর্মকর্তারা হবেন ওই বিটের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। পুলিশ বাহিনীতে ভালো কাজ করার অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনা ও আইনি সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে পুলিশকে মানুষের প্রথম ভরসাস্থলে পরিণত হতে হবে’।
গতকাল সোমবার দুপুরে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে বরিশাল রেঞ্জ, বরিশাল মেট্রোপলিটন ও অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক।
বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।
মতবিনিময় সভায় বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে বরিশাল রেঞ্জ, বরিশাল মেট্রোপলিটন ও অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে পুলিশ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এবার করোনাকালে পুলিশ জনসেবায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। মানুষ এর প্রতিদানও দিয়েছে’। করোনাকালে সম্মুখযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লে¬খ করে আইজিপি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল আধুনিকায়ন করা হয়েছে। বিভাগীয় হাসপাতালের আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের শিক্ষায় ৮টি বিভাগে আধুনিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে যথাসম্ভব সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে’।
তিনি বলেন, ‘কল্যাণ ও শৃঙ্খলা এক নয়। শৃঙ্খলার সঙ্গে কোনোভাবেই আপোস করা হবে না’।
আইজিপি দৃঢ় কন্ঠে বলেন, ‘এখন সময় এসেছে পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর। জনগণকে নির্মোহ সেবা দিতে হবে। বিনিময়ে তাদের শ্রদ্ধা পাবেন, ভালোবাসা পাবেন’।
সভায় উপস্থিত পুলিশ অফিসার ও সদস্যরা বিভিন্ন বিষয়ে আইজিপির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আইজিপি উত্থাপিত বিষয়সমূহ বিবেচনায় নিয়ে তা সমাধানের আশ্বাস দেন।
এর আগে সকালে আইজিপি বরিশালে জেলা পুলিশ সুপারের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বেলুন উড়ান ও কেক কাটেন। পরে তিনি জেলা পুলিশ লাইন্সের প্রধান ফটক ‘প্রত্যয়’ উদ্বোধন করেন।
সভার শুরুতে অকাল প্রয়াত পুলিশের এআইজি সাঈদ তারিকুল হাসান এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এসি আনিসুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে করোনাকালে আত্মাহুতি দেওয়া গর্বিত পুলিশ সদস্যদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
এদিকে আইজিপির আগমন বরিশালে কর্মর পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে, যা তাদেরকে নতুন উদ্যমে জনসেবায় উজ্জীবীত করবে