বন্ধুকে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার অপর বন্ধু

জন্মদিন পালন করতে ডেকে এনে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে বন্ধুকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় রিয়াদ নামের অপর বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বরিশাল নগরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমানতগঞ্জ ইসলামিয়া কলেজ রোডস্থ নিজ বাসা থেকে রিয়াদ (১৭) নামের ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বুধবার দিবাগত রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী রিয়াদকে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রুমান জানান, গ্রেপ্তারকৃত রিয়াদ অষ্টমশ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তারপর সংসারের প্রয়োজনে হাসপাতাল রোডে একটি জুতার দোকানে চাকুরী করতো। গত ২ নভেম্বর ঘটনার দিনের জন্মদিন পালনের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে রিয়াদ তার বন্ধু দীপ ঘোষকে কোলে তুলে নিয়ে নদীতে ফেলে দিচ্ছেন। যেহেতু দীপ সাঁতার জানে না তাই সে আর বেঁচে ফিরতে পারেনি। যদিও রিয়াদ ও তার বন্ধুরা পরবর্তীতে বুঝতে পারেন নদীতে ফেলে দেওয়া দীপ সাতার জানে না, তারা চেষ্টা করলেও আর দীপতে তুলতে পারেনি। ততক্ষণে দীপ পানিতে ডুবে যায়।
এসআই রুম্মান বলেন, ঘটনার পরের দিন ৩ নভেম্বর অপমৃত্যু মামলা হলেও ২৪ নভেম্বর জন্মদিনের ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ভিডিও দেখে অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তারপরই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত রিয়াদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য বরিশাল নগরের আমানতগঞ্জ এলাকার মিন্টু ঘোষের ছেলে দীপ ঘোষ এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এক বিষয়ে ফেল করায় আবারও পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গত ২ নভেম্বর সোমবার ছিল দীপের বন্ধু জুতার দোকানের কর্মচারী রিয়াদের জন্মদিন। ওইদিন রিয়াদ, দীপসহ ১০-১২ জন বন্ধু মিলে কীর্তনখোলা নদীতে ট্রলার করে রিয়াদের জন্মদিন পালনের উদ্যোগ নেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারা একটি ট্রলার ভাড়া করে কীর্তনখোলা নদীতে ঘুরে বেড়ায়। রাত ৮টার দিকে কেক কাটার সময় হৈ-হুল্লোড় করতে গিয়ে ট্রলার থেকে দীপ ঘোষ নদীতে পড়ে যায়। সাঁতার না জানায় সে নদীতে ডুবে মারা যান। গত ৩ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড়শ ফুট দূরে দীপের মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরিরা। এ ঘটনায় নিহত দীপের পিতা মন্টু ঘোষ বাদী হয়ে রিয়াদসহ ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় রিয়াদ দীপকে ধাক্কা মেরে নদীতে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।