বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দেওয়াদের মধ্যে অন্যতম লোকমান হোসেনকে মারধর করেছে বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্ররা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের ১০০২ নম্বর কক্ষে একদল ছাত্র এ হামলার ঘটনা ঘটায়।
আন্দোলনের ৩৫তম দিন সোমবার (২৯ এপ্রিল) উপাচার্য অধ্যাপক এসএম ইমামুল হক ৪৬ দিনের ছুটি যাওয়ার একদিন পরেই ওইি হামলার ঘটনা ঘটে। লোকমান হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের শিক্ষার্থী। ববি ভিসির পদত্যাগ অথবা পূর্ণাঙ্গ মেয়াদের ছুটির দাবিতে সদ্য শেষ হওয়া আন্দোলনের নেতৃত্ব দানকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিল লোকমান হোসেন।
লোকমানকে হাসপাতালে নিয়ে আসা উদ্ধারকারীরা জানান, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের ১০০২ নম্বর কক্ষে লোকমান হোসেন অবস্থান করছিলেন। আকস্মিকভাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সোহেল, সালাউদ্দিন শান্ত, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের রাকিব, হাফিজ, মার্কেটিং বিভাগের রাজিব, ফিন্যান্স বিভাগের রিফাত বিন নাফিসসহ বেশ কয়েকজনু জুনিয়র ছাত্র তার কক্ষে প্রবেশ করে। এসময় তারা লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে লোকমান হোসেনকে আহত করে। এসময় কক্ষে থাকা অন্যরা লোকমানকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলেও তাদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়।
আহত লোকমান হোসেন জানান, দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. একেএম মাহবুব হাসান (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য) সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অবস্থান করেন। এসময় তার সহপাঠী ছাত্রলীগের মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত জুনিয়র ছাত্রদের দিয়ে তাকে ক্যাম্পাসের বাহিরে ডাকেন। কিন্তু তিনি যাননি। এরপর বিকেলে ছাত্রাবাসে থাকাবস্থায় আকস্মিক সিফাতের সহযোগী জুনিয়র ছাত্ররা এ হামলা চালায়।
এদিকে আন্দোলনকারী অন্য শিক্ষার্থীরা জানান, সিফাত শুরু থেকেই আন্দোলনের সঙ্গে থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে একক নেতৃত্বের আশায় নানানভাবে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ৩/৪ জনকে শাসিয়ে আসছিলেন। যারমধ্যে লোকমান হোসেন ও শফিকুল ইসলাম অন্যতম। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে সুশীল সমাজ, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের বৈঠকে আন্দোলনকারী মূল নেতাদের প্রবেশ করতে দেয়নি সিফাত। মূলত ক্যাম্পাসে একক নেতৃত্ব বিস্তারের আশায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত বলেন, একসঙ্গে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি আমরা। এখানে আমার জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য দুস্কৃতিকারীরা আমার নাম ব্যবহার করতে পারে।