বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অপসারণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। গত শুক্রবার আমরণ অনশন স্থগিত করার পর ্আজ রোববার দুই ঘন্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা।
রোববার (২৮ এপ্রিল) আন্দোলনের ৩৪তম দিনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
এর আগে ২৪ এপ্রিল থেকে আপমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। আমরণ অনশন পালন করতে গিয়ে চারজন শিক্ষক ও ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হয়ে পরে। এর প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মো. হানিফ বরিশালের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরণ অনশন ভাঙান। তাদের আশ^াসের প্রেক্ষিতে সোববার ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি স্থগিত করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। তবে তারা উপাচার্য অপসারণে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তার অংশ হিসেবে রোববার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতা মো. শফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) থেকে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বরিশালের সুশীল সমাজের দেওয়া আশ্বাসে সোমবার পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তবে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত আছে। সোমবারের মধ্যে উপাচার্য ইমামুল হককে অপসারণ করা না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে পড়া ববি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, উপাচার্যর অপসারণ করতে হবে। তা না হলে তাঁর যে বাকি সময় আছে পূর্ণ সময় ছুটিতে পাঠাতে হবে। এই সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে উপাচার্যের এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে এবং প্রত্যাহারের দাবিতে ২৭ মার্চ থেকে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ২৮ মার্চ উপাচার্য ক্যাম্পাস এবং হল বন্ধ ঘোষণা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিনই ১০ দফা বাদ দিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ২৯ মার্চ উপাচার্য তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগ দাবিতে অনড় থাকেন।
এদিকে উপাচার্য ১৫ দিনের ছুটিতে গিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ‘শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণের একদফা দাবিতে গত ২৪ এপ্রিল থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন। টানা অনশনে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। ওই দিন রাতে শিক্ষার্থীদের সন্তানতুল্য উল্লেখ করে তাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে আমরণ অনশনে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা। গত শুক্রবার ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মো. হানিফ বরিশালের সুমীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরণ অনশন ভাঙান।