বরগুনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই জর্দা কারখানা

বরগুনার সদর উপজেলার পৌরসভার হাইস্কুল সড়কে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে আঃ আজিজ কেমিক্যাল ওয়ার্কসের ‘আমিন ঢাকা জর্দা’ নামে একটি কারখানা।
এ কারখানার পাশে রয়েছে বরগুনা জিলা স্কুল, বরগুনা কামিল মাদ্রাসা ও বরগুনা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা কারখানা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই চলছে এ জর্দার কারখানা। তামাকজাত দ্রব্য হাই স্কুল সড়কের পাশে একটি টিনের ঘরের তৈরি হচ্ছে এই জর্দা। এ কারণে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ জনসাধারণ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মিশিয়ে এই জর্দা তৈরি করা হচ্ছে। এই কারখানায় ৩-৪ জন নারী শ্রমিক কাজ করছে। এ সকল নারী শ্রমিকেরা নিজেরা নিরাপদ কোনও মাস্ক না পরেই কাজ করছে। এতে করে জনস্বাস্থ্যের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ফলে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এই আমিন ঢাকা নামে জর্দার কারখানাটি।
তামাকের গ্যাস চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকে শ্বাসকষ্ট ও ক্যানসারের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এ জর্দা কারখানার নিকোটিনের প্রভাবে এলাকার যুবসমাজ মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বরগুনা জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আল-আমিন বলেন, স্কুলের পাশে খোলামেলা একটি টিনের ঘরে বসে জর্দা তৈরীর কারণে আমারা শ্বাসকষ্ট ও ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছি।
বরগুনা দারুল উলুম নেছারিয়া কামিল (এম.এ.) মডেল মাদ্রাসার আলিম শাখার ছাত্র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, আমাদের মাদ্রাসার কাছেই আমিন ঢাকা নামে জর্দার কারখানা আছে। তার গ্যাস ও গন্ধে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাই প্রশাসনের কাছে অবৈধ কারখানা বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।
জর্দার কারখানার ব্যাপারে বরগুনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহাদৎ হোসেন বলেন, জরুরি ভিত্তিতে আমিন ঢাকা নামে এই জর্দা কারখানাটি বন্ধ না করলে পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এ জর্দার গন্ধের কারণে প্রতিনিয়ত ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়বে।
জর্দার কারখানার ব্যাপারে বরগুনা দারুল উলুম নেছারিয়া কামিল (এম.এ.) মডেল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মামুন অর রশীদ বলেন, তামাকের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। তামাকের গ্যাস চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় স্কুল ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ এই জর্দার কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
আঃ আজিজ কেমিক্যাল ওয়ার্কসের ‘আমিন ঢাকা জর্দা’ কারখানার প্রোপাইটার মোঃ বনি আমিন জিয়া বলেন, আমি নিয়ম মেনেই জর্দা কারখানা করেছি। এবং আমরা তেমন বড় আকারে কোন কারখানা করিনি এটি কেবল ছোট পরিসরে শুরু করেছি।
বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওছার হোসেন জানান, জর্দার কারখানার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব ওই জর্দা কারখানার লাইসেন্স আছে কিনা এবং যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি হচ্ছে যদি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে অভিযোগ করে অবশ্যই আমরা তদন্ত সাপেক্ষ আইন অনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।