বরিশাল নগরীতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নকশা বর্হিভূত ভবন নির্মাণের অভিযোগ

বরিশাল নগরীর ক্লাব রোডে সিটি করপোরেশনের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা উপেক্ষা করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। সিটি মেয়র, পুলিশ, এমনকি আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপক্ষো করে গত ২ বছর ধরে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর সিটি করপোরেশন থেকে ছয় তলা আবাসিক ভবনের নকশা অনুমোদন নিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করেন নগরীর ক্লাব রোডের বাসিন্দা আরিফ মোহাম্মদ। ইমারত নির্মাণ বিধি অনুযায়ী বাড়ির সিমানা থেকে এক মিটার জমি উম্মুক্ত না রেখে নির্মাণ কাজ শুরু করায় স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট সেলিনা পারভীন বিসিসিতে লিখিত আপত্তি দেন। গত দুই বছর ধরে নির্মাণ কাজ চলাকালে তিন দফায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নোটিশ দেয় বরিরশাল সিটি করপোরেশন। এমনকি সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহও সরেজমিনে পরিদর্শন করে কাজ বন্ধের মৌখিক নির্দেশনা দেন। কিন্তু এতকিছুর পরও বিধি বর্হিভূত ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়নি।
আইনজীবী সেলিনা পারভীনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিসিসির সার্ভেয়ার গত ১৭ আগস্ট উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে জমি পরিমাপ করেন।
বিসিসি সার্ভেয়ার তাপস প্রসাদ মজুমদার গত ২৮ আগস্ট প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে জমা দেয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ‘আরিফ মোহাম্মদ নোটিশের তোয়াক্কা না করে ছয় তলার নকশা অনুমোদন করে অননুমোদিতভাবে সাত তলা ভবন নির্মাণ করেন।
এ ঘটনায় সেলিনা পারভীন সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৯৬/২০১৮ সালে একটি মামলা করেন। আদালত ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল উভয় পক্ষকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখাসহ স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের পরও নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখায় উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) বরাবর আইনগত সহায়তা চেয়ে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই আবেদন করেন সেলিনা পারভীন। কোতয়ালী মডেল থানার ওসি সরেজমিন তদন্ত করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর দেয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন ‘বারবার নোটিশ প্রদান করার পরও বিবাদী পক্ষ নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে’।
বিসিসির সার্ভেয়ার তাপস প্রসাদ মজুমদার জানান, সিটি করপোরশেন সার্ভে করে নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণের সত্যতা পেয়েছে।
বিসিসির সড়ক পরিদর্শক গোলাম কবির বলেন, সার্ভেয়ারদের দেয়া প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে অবৈধ অংশ সরিয়ে নেয়ার জন্য অভিযুক্তের কাছে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সেলিনা পারভীনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিটি মেয়র নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। সার্ভেয়ার পাঠিয়ে দুইবার পরিমাপ করে দেখা গেছে ভবনটি অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়নি। এ ঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।