বরিশালে আন্তর্জাতিক মানের জাহাজ নির্মাণ

বরিশালে আন্তর্জাতিক মানের জাহাজ নির্মাণ

বরিশালে আন্তর্জাতিকমানের যাত্রীবাহী এবং পন্যবাহী জাহাজ নির্মাণ করে সাড়া ফেলেছে। বাংলাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ এবং সর্বাধুনিক ৩ হাজার সাড়ে ৩ হাজার টনের ধারণ ক্ষমতার জাহাজ জাহাজ নির্মাণ হচ্ছে বরিশালের বিভিন্ন শিপইয়ার্ডে। বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছে এই শিল্প। দক্ষিণাঞ্চলের জন্য সম্ভাবনাময় বড় শিল্পও এটি। এসব শিল্পে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার শ্রমিক কাজ করে। ভারতে রপ্তানীর জন্য জাহাজ নির্মাণের পর অন্যন্য দেশেও রপ্তানী করে বিশ^বাজারে ভূমিকা রাখতে চান এখানের উদ্যোক্তারা।

চট্টগ্রাম এবং ঢাকাতে যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে বরিশালে সেই সুবিধা না থাকায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে বরিশাল। গ্যাস ও কাচামাল সহজলভ্য না হওয়ায় নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে এমন কথা জানিয়েছেন এই শিল্পের উদ্যোক্তারা। গ্যাস ও কাচামালের সুবিধার সঙ্গে সহজ শর্তে ঋণ পেলে ঢাকা, চট্টগ্রামের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই ঠিকে থাকতে পারবে এই শিল্প। বরিশালে নির্মিত জাহাজ রপ্তানী করা সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশালে সুন্দরবন, অ্যাডভেঞ্চার, সুরভী, কীর্তনখোলাসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিকমানের শীপইয়ার্ডে নির্মাণ হচ্ছে বিলাসবহুল যাত্রীবাহী ও পন্যবাহী জাহাজ। যার মধ্যে সুন্দরবন শিপইয়ার্ডে বর্তমানে ৩ তরোকামানের বিলাসবহুর লঞ্চ নির্মাণ কাজ চলছে। একই সঙ্গে সেখানে পন্যবাহী জাহাজও নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগেিয় চলছে। অন্যদিকে অ্যাডভেঞ্চার শিপইয়ার্ডে পন্যবাহী জাহাজের সঙ্গে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অর্ডার হিসেবে দুটি আধুনিক জাহাজ নির্মাণ কাজ চলছে। এর মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের অপার সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা। আগামীতে বিশে^র সব দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জাহাজ নির্মাণ করতে চান তারা।

সুন্দরবন শিপইয়ার্ডে কাজ করছেন মো. আলী হোসেন। তিনি বলেন, বেকারদের কর্মসংস্থানের নতুন ঠিকানা হয়ে উঠছে জাহাজ নির্মাণ শিল্প। একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হয়েছে, তেমনি আমাদের স্বচ্ছন্দও ফিরছে। মাসে  কেউ কেউ মাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা রোজগার করেন এই শিল্পে কাজ করে।

অ্যাডভেঞ্চার শিপ বিল্ডার্স এর এই ব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই শিপইয়ার্ডে অনেকগুলো যাত্রীবাহী এবং পন্যবাহী জাহান নির্মাণ হয়েছে। দেশর বাইরে রপ্তানীর চেষ্টা চলছে। ভালোমানের কাজ হওয়ায় ভারতের দুটি জাহাজ নির্মাণের অর্ডার পেয়েছেন। বিদেশের বড় জাহাজ নির্মাণ করে দেবার সক্ষমতা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সুন্দরবন শিপইয়ার্ডের পরিচালক মো. মফিজুর রহমান বাবুল বলেন, আমরা বিলাসবহুল লঞ্চ যেমন নির্মাণ করছি তার পাশাপাশি পন্যবাহী জাহাজও নির্মাণ করছি। বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চে নতুনত্ব এনেছি আমরা। এসব জাহাজে লিফট সুবিধা সহ বিশ^মানের সুবিধাও রয়েছে। এসব জাহাজ পৃথিবীর সব দেশে চলার উপযোগী। 

বরিশাল চেম্বারের সভাপতি ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের উদ্যোক্তা সাইদুর রহমান রিন্টু, বলেন, সুন্দরবন, সুরভী, কীর্তনখোলা, অ্যাডভেঞ্চার-এর শিপইয়ার্ডে আন্তর্জাতিকমানের জাহাজ নির্মাণ করছে। এটি দক্ষিণাঞ্চলের জন্য সম্ভাবনাময় বৃহৎ শিল্প। এখানে শ্রমিক সুবিধা রয়েছে। তবে কাচামাল ও গ্যাস সুবিধা না থাকায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাচ্ছেন তারা। গ্যাস ও কাঁচামালের সুবিধার সঙ্গে সহজ শর্তে ঋণ পেলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে এই শিল্প।