বরিশালে ইউএনও ও পুলিশের দুই মামলায় কারাগার থেকে ৯ নেতাকর্মী মুক্ত

বরিশালে ইউএনও ও পুলিশের মামলায় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন আওয়ামী লীগের ১২ নেতাকর্মী। বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে বরিশাল কেন্দ্রিয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তারা। এদের মধ্যে ৩ জন আসামী ইউএনও’র মামলায় এবং ৯ জন আসামী জামিন পেয়েছেন পুলিশের মামলায়। ইউএনও’র মামলায় জামিন পাওয়া ৩ আসামী পুলিশের মামলারও আসামী। এ কারনে স্বশরীরে কারামুক্তি পেয়েছেন ৯জন ব্যক্তি। কারাফটকে তাদের স্বাগত কিংবা শুভেচ্ছা জানাতে আসেনি আওয়ামী লীগের বড় কোন নেতা। তবে তাদের কিছু স্বজন ও অনুসারী উপস্থিত ছিলেন। কারাফটক থেকে তারা মিছিল সহকারে নগরীর কালীবাড়ি রোডে সিটি মেয়রের বাসভবনের দিকে যায়। মিছিলে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, সাদিক ভাই এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’ শ্লোগান দেয়া হয়।
এর আগে বুধবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট আদালতে ইউএনও’র মামলায় ১৩ জন এবং পুলিশের মামলায় ২১ জনের জামিন আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শুনানী শেষে বিচারক মো. মাসুম বিল্লাহ দুপুর সোয়া ১টার দিকে আদেশ দেন। আদেশে ইউএনও’র মামলায় ৩ জন এবং পুলিশের মামলায় ৯ জনের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
ইউএনও মো. মুনিবুর রহমানের মামলায় ৩ জন মো. ইকতিয়ার উদ্দিন, আ. সালাম মনু ও আলো গাজী এবং কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক শাহজালাল মল্লিকের মামলায় ৯ জন মো. ইকতিয়ার উদ্দিন, আ. সালাম মনু, বরিশাল-পটুয়খালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. মমিন উদ্দিন কালু, মো. কবির তালুকদার, হুমায়ুন কবির হাওলাদার, মো. ইলিয়াছ, জমির উদ্দিন, আলো গাজী ও নাসির উদ্দিনের জামিন মঞ্জুর করেন। একই আদেশে আদালত অন্যান্যদের জামিন না মঞ্জুর করেন।
আদালতের আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন আসামী পক্ষের আইনজীবী তালুকদার মো. ইউনুস। জামিন না মঞ্জুর হওয়া আসামীদের পরবর্তীতে জামিন আবেদন করার কথা বলেন তিনি।
গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের অনাকাংখিত ঘটনায় পরদিন ইউএনও এবং পুলিশ বাদী হয়ে সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ সহ আওয়ামী লীগের ৬০২ জন নেতাকমীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়েল করেন কোতয়ালী মডেল থানায়। এ মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ২৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে চোখে গুলিবিদ্ধ তানভীর হাসান এবং মনিরুজ্জামান মনির গ্রেফতার অবস্থায় ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ২ জন বাদে অপর ২১ জনের গতকাল অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে জামিনের আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা।
এদিকে ইউএনও এবং ওসির মামলার পাল্টা হিসেবে রবিবার (২২ আগস্ট) প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন এবং সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার বাদী হয়ে ইউএনও এবং ওসি সহ মোট ১১৪ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন আদালতে। আদালত ওই মামলার অভিযোগ তদন্ত করে ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পিবিআই’কে নির্দেশ দেন। সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে ওই দিনই রাতে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদলের বাসভবনে বিভাগীয় ও জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে সিটি মেয়র সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষের মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর। ওই বৈঠকের সুফল হিসেবে বুধবার (২৫ আগস্ট) ১২ আসামীর জামিন হলো বলে মনে করছেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর।