বরিশালে ইলিশের আকাল

আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র এই ৩ মাস ইলিশের প্রধান মৌসুম। কিন্তু ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে বরিশালের পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে। দক্ষিণের সর্ববৃহত ইলিশ মোকাম পোর্ট রোড আড়ত অনেকটাই ইলিশ শূন্য। গত ২৩ জুলাই সাগরে সব ধরণের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতেও এই মুহূর্তে ইলিশ শিকারে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু তারপরও দক্ষিণের সর্ববৃহত ইলিশ মোকাম পোর্ট রোড আড়ত অনেকটাই ইলিশ শূন্য।
নদী সাগর থেকে আহরিত কিছু ইলিশ মোকামে আসলেও তার দাম চড়া। মাছের সরবরাহ কম থাকায় আয় রোজগার হারিয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন মৎস্য শ্রমিকরা। গভীর সমূদ্রে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে মাছ ধরা ট্রলারগুলো শূন্যহাতে উপকূলে ফিরে আসায় বাজারে ইলিশের ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। তবে আগামী দিনগুলোতে মোকামে প্রচুর ইলিশ সরবরাহ হবে বলে আশা করছেন তারা।
স্থানীয় নদ-নদীর কিছু ইলিশ মোকামে আসলেও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় দাম চড়া। মৎস আড়ৎদার নাসির উদ্দিন জানান প্রতিদিনি পোর্ট রোড আড়তে ৪০০ থেকে ৫০০ মন ইলিশ আসতো সেখানে গতকাল রোববার বাজারে ১০০ মন ইলিশও আসেনি। তিনি ধারণা করছেন বৈরী আবহাওয়া ও সাগরে পর্যাপ্ত মাছ না থাকায় এই সংকট দেখা দিয়েছে।
ব্যাবসায়ী নাসির উদ্দিন জানান, নদী ও সাগরে চাপলি মাছের নামে ছোট ফাসের জাল ব্যবহার করে ইলিশের ছোট জাতকে ধংস করার করণে ইলিশ মাছ কমে যাচ্ছে। তিনি এই জালের ব্যবহার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার বরিশাল মোকামে ১ কেজি ২০০ গ্রাম আকারের প্রতি মন ইলিশ পাইকরী ৪৬ হাজার, কেজি সাইজের প্রতি মন ৪১ হাজার, রপ্তানী যোগ্য এলসি সাইজ (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) প্রতিমন ৩৮ হাজার, ৪০০ থেকে সাড়ে ৫০০ গ্রাম আকারের (ভেলকা) প্রতিমন ২১ হাজার এবং গোটলা সাইজ (২৫০ থেকে সাড়ে ৩০০ গ্রাম) প্রতিমন ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মাছ কিনতে আশা অঞ্জনা রায় বলেন, ভরা মৌসুমেও ইলিশের চড়া দাম হওয়ায় হতাশ আমরা। তবে এখন একটু দাম কম হওয়া উচিত ছিলো কিন্তু বাজারে ইলিশ মাছ তেমন নেই।
বরিশাল জেলা মৎস্য আড়তদার এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রিপন জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় মাছ ধরা ট্রলারগুলো আবার গভীর সমূদ্রে যেতে শুরু করেছে। সাগর থেকে ট্রলারগুলো ফিরে আসলে ইলিশের সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি দামও কমবে।
আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র এই ৩ মাস ইলিশের প্রধান মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করে মৎস্য বিভাগ।
।