বরিশালে করোনা ওয়ার্ডে ২৪ ঘন্টায় ৬ রোগীর মৃত্যু

বরিশালে করোনা ওয়ার্ডে ২৪ ঘন্টায় ৬ রোগীর মৃত্যু


বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত  করোনা উপসর্গ নিয়ে আরো ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত মার্চ মাস থেকে এই পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৯১জন রোগী মারা গেছেন। যার মধ্যে ৩২ জনের করোনা পজেটিভ বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যলয় থেকে জানানো হয়েছে, হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠার পর গতকাল রোববার পর্যন্ত ৬১৩জন রোগী ভর্তি হয়েছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৯১জন মারা গেছে। তাদের সবার নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। যার মধ্যে ৩২ জনের করোনা পজেটিভ ছিল। হিসেব অনুযায়ী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে গড় মৃত্যুর হার ১৪.৮৪ ভাগ।

করোনা ওয়ার্ডের রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা বলতে কিছু নেই। ডাক্তাররা নামমাত্র দায়িত্ব পালন করেন। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট প্রাপ্তি নিয়েও রয়েছে চরম ভোগান্তি। করোনার রিপোর্ট না পাওয়ায় মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসা করতেও হাসপাতালের চিকিৎসকরা অপারগতা প্রকাশ করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। প্রতিদিন এই ওয়ার্ডে মারা যাচ্ছেন ২ থেকে ৬জন রোগী। 

গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল বিমান বন্দর এলাকার এক নারীর (৪৪) মৃত্যু হয়। তার করোনা পজেটিভ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় ওই নারীকে (ফাতেমা বেগম) জ্বর-সর্দি-কাশিসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ওয়র্ডে ভর্তি করেন তার স্বজনরা।

এদিকে গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় উজিরপুরের সারশি এলাকার এক ব্যক্তির (৩৫) মৃত্যু হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে করোনা উপসর্গ নিয়ে তাকে (ইউসুব সরদার) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা নেগেটিভ ছিল। 
এ ছাড়া রাত ১০টায় খন্দকার আলী (৭০) নামে জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসি গ্রামের বাসিন্দা করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। গত ১৮ জুন রাতে তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনা পরীক্ষায় তার নেগেটিভ এসেছে।

অন্যদিকে গতকাল রোববার সকাল ৮টা ১ মিনিটে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাকেরগঞ্জের রামনগর এলাকার এক নারীর (৪০) মৃত্যু হয়। করোনা উপগর্স নিয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টায় তাকে (ফিরোজা বেগম) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তারও নমুনা পরীক্ষা করা হলে করোনা নেগেটিভ হয়।

একই দিন সকাল পৌনে ১০টায় করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক বৃদ্ধার (৬০) মৃত্যু হয়। গত শুক্রবার বিকেলে করোনা উপসর্গসহ নগরীর কাউনিয়া ব্রাঞ্চ রোডের ওই নারীকে (পুতুল রানী দাস) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও হাতে পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

এর আগে গত শনিবার রাত ১১টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পটুয়াখালী সদরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এক বৃদ্ধের (৬০) মৃত্যু হয়। গত শনিবার ভোরে তাকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। যদিও পরীক্ষায় তার করোনা নেগেটিভ হয়েছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬জন রোগী মারা গেছেন। মৃত রোগীদের মধ্যে ২জন করোনা পজেটিভ হয়েছে। তিনজন নেগেটিভ এবং একজনের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।