বরিশালে তথ্য অধিকার বিষয়ক ভ্রাম্যমাণ প্রচারণা

বরিশালে তথ্য অধিকার বিষয়ক ভ্রাম্যমাণ প্রচারণা

স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে তথ্য অধিকার এই প্রত্যয়ে ‘তথ্য প্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত হোক’ স্লোগানকে সামনে রেখে বরিশালে অনুষ্ঠিত হয়েছে তথ্য অধিকার বিষয়ক ভ্রাম্যমাণ প্রচারণা।

টিআইবির অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরিশাল এর উদ্যোগে ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপ ওই প্রচারণাচালা।
মঙ্গলবার বরিশাল বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী তথ্য অধিকার বিষয়ক ভ্রাম্যমাণ প্রচারণা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে নাগরিকের চিন্তা, বিবেক ও বাক্-স্বাধীনতাকে অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, যার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ‘তথ্য অধিকার’। জাতিসংঘের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত সনদ ১৯৬৬ (অনুচ্ছেদ ১৯) এবং জাতিসংঘ দুর্নীতিবিরোধী সনদসহ [অনুচ্ছেদ ১০ (৩)] টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) ১৬ এ উল্লিখিত টেকসই উন্নয়ন ও সর্বস্তরে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে তথ্যে প্রবেশগম্যতা একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। টিআইবিসহ বিভিন্ন মহলের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে চিন্তা, বিবেক ও বাক্-স্বাধীনতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ২০০৯ সালে বাংলাদেশে “তথ্য অধিকার আইন” পাশ করা হয়। বাংলাদেশের তথ্য অধিকার আইন অনেক শক্তিশালী হলেও বাস্তবায়ন পর্যায়ে এর বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তথ্যের চাহিদা সৃষ্টিতে উপযুক্ত পরিবেশ ও প্রতিবেশের অভাব এবং তথ্য গোপন রাখার সংস্কৃতির কারণে আইনটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা সংশ্লিষ্টদের অনেকের কাছেই আইনটির তাৎপর্য সঠিকভাবে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। আইনটি প্রণয়নের এক যুগেরও বেশি সময় পার হলেও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য প্রকাশের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। বাংলাদেশে প্রচলিত সকল আইনই সরকার জনসাধারণকে নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করে থাকে। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ হলো একমাত্র আইন, যেখানে জনগণ এই আইনটি সরকার বা কর্তৃপক্ষের জবাবদিহির অন্যতম একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। তবে, বাস্তবতা হচ্ছে শুরু থেকেই সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক ধরনের গোপনীয়তার চর্চা বিদ্যমান। তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর প্রেক্ষিতে ঞযব ঙভভরপরধষ ঝবপৎবঃং অপঃ, ১৯২৩ এর কার্যকরতা সংকুচিত হয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর প্রাধান্যের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, “প্রচলিত অন্য কোনো আইনে তথ্য প্রদান সংক্রান্ত বিধানাবলী এই আইনের বিধানাবলী দ্বারা ক্ষুণœ হইবে না এবং তথ্য প্রদানে বাধা সংক্রান্ত বিধানাবলী এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সাংঘর্ষিক হইলে, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।” অথচ দুর্ভাগ্যের ব্যাপার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এ ঞযব ঙভভরপরধষ ঝবপৎবঃং অপঃ, ১৯২৩ এর সন্নিবেশ তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর প্রতি সরকারের বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের শামিল।

তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে তরুণ প্রজন্মকে অনুঘটকের ভূমিকা পালনে উদ্যোগী করে তুলতে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় দিনব্যাপী প্রচারণায় তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি তথ্য জানার জন্য আবেদন, আপিল ও অভিযোগ করার পদ্ধতি সর্ম্পকে হাতে-কলমে শেখানো হয়।