বরিশালের গোমা সেতুর উচ্চতা জটিলতা নিরসনে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত

বরিশাল বাকেরগঞ্জ উপজেলার রাঙ্গামাটি নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর উচ্চতা নিয়ে জটিলতা নিরসনে ফের আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।রবিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয় রাঙ্গামাটি নদীর উপর গোমা পয়েন্টে এই সেতু নির্মাণ করছে। বৈঠকে সেতুর উচ্চতা জটিলতা নিরসনে একটি তিনতলা লঞ্চ চালিয়ে শেষ ভাগের কাজ সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক জানান, সভায় লঞ্চ চলাচল যাতে ব্যহত নয় সে বিষয়টি লক্ষ্য রেখে বিআইডব্লিউটিএ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কারিগরি কমিটিকে তিন তলা বিশিষ্ট একটি লঞ্চ চালিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া একটি কমিটি থাকবে বিষয়টি দেখার জন্য।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুশীল কুমার সাহা জানান, বৈঠকে উপস্থিত প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়াজ হোসেন নতুন সিদ্ধান্তের বিষয়টি তাকে জানিয়েছেন।
বাকেরগঞ্জের বাসিন্দা জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোহসীন জানান, পেয়ারপুর সেতুর নীচ থেকে নৌ-যান চলাচল করতে পারলে তার চেয়ে তিন মিটার উচু গোমা সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচল বিঘ্ন হওয়ার কথা নয়। সেতু নির্মাণে জটিলতা তৈরি হওয়ায় বাকেরগঞ্জ ও পটুয়খালীর কয়েক লাখ মানুষের মাঝে উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানান।
স্থানীয়রা জানান, রাঙ্গামাটি নদীর দক্ষিন-পূর্ব প্রান্তে বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি, চরাদি, দুধল, কবাই, গারুরিয়া নলুয়া ও ফরিদপুর ইউনিয়ন অবস্থিত। একই প্রান্তে আছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালীর দুমকী, বাউফল ও দশমিনা উপজেলা। এসব এলাকার মানুষের স্কুল-কলেজ, হাট বা স্থানীয় বাজার কিংবা বিভাগীয় শহরে যাতায়াত করতে হয় নৌকায় খরস্রোতা রাঙ্গামাটি নদী নৌকায় পেড়িয়ে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের জন্য একদিন পর একদিন যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে থাকে।
উচ্চতা নিয়ে অনুমোদনের ৫ বছর পর বিআইডব্লিউটিএ ফের উচ্চতা বৃদ্ধি করে চিঠি দেয়ায় ৬৫ ভাগ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরও থমকে গেছে গোমা সেতুর নির্মান কাজ।
বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে বাকেরগঞ্জ হয়ে পটুয়াখালী দুমকি পর্যন্ত সহজ যাতায়াতের লক্ষে বরিশাল-দিনারেরপুল-লক্ষ্মীপাশা-দুমকি জেলা মহাসড়কের ১৪তম কিলোমিটারে থাকা বাকেরগঞ্জের রাঙ্গামাটি নদীর গোমা পয়েন্টে ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করে সওজ। ২০১৫ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে প্রকল্প প্রনয়ন ও অনুমোদন, বাজেট বরাদ্দ এবং টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ২০১৮ সালের মে মাসে শুরু হয় সেতু নির্মাণ কাজ।
২০১৫ সালে এই নদী পথের শ্রেনী বিন্যাশ বিআইডবিøউটিএ’র কাছে জানতে চায় সওজ। বিআইডব্লিউটিএ তখন সওজকে জানায়, ‘ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স ষ্ট্যান্ডার্ড হাই- ওয়াটার লেভেল হতে কমপক্ষে ৭ দশমিক ৬২ মিটার এবং হরাইজেন্টাল ক্লিয়ারেন্স ৩০ দশমিক ৪৮ মিটার রেখে সেতুটি নির্মাণে কোনো আপত্তি নেই। বিআইডব্লিউটিএ’র ক্লিয়ারেন্স অনুযায়ী সওজ ডিজাইন ইউনিট সেতুর ডিজাইন প্রনয়ন করে। ৫৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৮৩ দশমিক ১৮৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ সেতুটির ৬৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ২০১৯ সালের মার্চ মাসে উচ্চতা জটিলতায় বন্ধ হয়ে যায় কাজ গোমা সেতুর কাজ।