বরিশালের শিক্ষা-সংস্কৃতি বিস্তারের মূর্ত প্রতীক অশ্বিনী কুমার

বরিশালের শিক্ষা-সংস্কৃতি বিস্তারের মূর্ত প্রতীক অশ্বিনী কুমার

বরিশালের শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্যের মূর্ত প্রতীক অশ্বিনী কুমার দত্ত। পিছিয়ে থাকা বরিশালকে আলোকিত করে গেছেন অশি^নী কুমার। একজন প্রগতিমনা মানুষ অশি^নী কুমারের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত বরিশাল কলেজের সঙ্গে তাঁর নাম যুক্ত হলে বরিশাল সমৃদ্ধ হবে। ধর্মীয় চিন্তা থেকে নয়, প্রগতিশীল মুক্ত বুদ্ধির মানুষ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোন মানুষ এই নামকরণের বিরুদ্ধে থাকতে পারে না। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সংকীর্ণ চিন্তা থেকে বিষয়টি না দেখার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।

রোববার (৯ জুলাই) দুপুর ১২টায় বরিশালের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সরকারি বরিশাল কলেজকে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে নামকরণ বাস্তবায়ন কমিটির সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে নামকরণ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মানবেন্দ্র বটব্যালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, অশি^নী কুমারকে নিয়ে কোন বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। একই সঙ্গে ধর্ম দিয়ে যেন অশ্বিনী কুমারসহ দেশের বরেন্য মানুষদের পৃথক করা না হয়। 

বক্তারা বলেন, অশ্বিনী কুমার দত্তের নাম বরিশার কলেজের সঙ্গে যুক্ত করা কোন একক ব্যক্তির প্রচেষ্টা নয়। তাই এটাকে ব্যক্তিগতভাবে যারা দেখছেন তারা ভুল করছেন। এই দাবির পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক, সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের অবদান রয়েছে। সমষ্টিগত দাবির ফসল সরকারের প্রস্তাবনা। এই প্রস্তাবনার সঙ্গে সবাই থাকবেন এবং আছেন বলেই আমরা মনে করি। তারপরও এখনো যারা সরকরি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তনের সরকারের নেওয়া প্রস্তাবনার পক্ষে অবস্থান নিতে পারছে না, তাদের এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করতে কৌশলী ভূমিকা নিতে হবে। ইতিপূর্বে যারা বরিশালের শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষায় অবস্থান নিয়ে ভূমিকা নিয়েছিলেন তাদের আহ্বান জানানো। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক দলকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন বক্তারা। এ ছাড়া দাবিসম্বলিত প্রচারপত্র বিলি, নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সরকারি প্রস্তাবনা দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষে প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

এসময় বক্তব্য রাখেন, কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক, কেএসএ মহিউদ্দি মানিক বীরপ্রতীককে সদস্য সচিব, সচেতন নগিরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা, উদীচী বরিশালের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরণ, সমন্বয়কারী স্নেহাংশু বিশ্বাস, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশান্ত ঘোষ, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা সভাপতি নজরুল হক নীলু, বাসদ জেলা আহ্বায়ক ডা. মণিষা চক্রবর্তী, সম্মিলিতি সামাজিক আন্দোলনের কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু, সুরঞ্জিত দত্ত লিটু।

সভায় উপস্থিত থেকে মতামত দেন, উদীচী বরিশালের সাবেক সভাপতি অ্যাড. বিশ্বনাথ দাস মুনশী, খেলাঘর বরিশাল জেলা সভাপতি নজমুল হোসেন আকাশ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতিম-লীর সদস্য শুভংকর চক্রবর্তী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দুলাল মজুমদার, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাড. একে আজাদ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য আজমল হোসেন লাবু, গণনাট্য সংস্থার আজিজুর রহমান খোকন। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, উপপস্থিত ছিল ব্রজমোহন থিয়েটার, সংকল্প, উত্তরণ, তানসেন সঙ্গীত বিদ্যালয়, প্রজন্ম নাট্যকেন্দ্র, বরিশাল থিয়েটার, জাতীয় কবিতা পরিষদ,  বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।
গতকালের সভা থেকে আহ্বায়ক মানবেন্দ্র বটব্যালসহ অন্যান্য বক্তারা বলেন,

কমিটির আহ্বায় অ্যাড. মানবেন্দ্র বটব্যাল বলেন, আমরা বিশ্বাস করি সরকারি বরিশাল কলেজের সঙ্গে মহাত্মা অশ্বিনী কুমারের নাম যুক্ত করার পক্ষেই সবাই ছিলেন এবং আছেন। চলমান এই কার্যক্রমের সঙ্গে সরকার এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তি আগের মতো থেকেই দ্রুত বাস্তবায়নে সহযোগিতা দেবে।