বাটাজোর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওষুধ পরিত্যাক্ত স্থানে ফেলার অভিযোগ

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় সরকারি ওষুধ ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ রোগীদের মাঝে সরকারি ওষুধ বিতরণ না করে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর সেগুলো ফেলে দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছ। তীব্র সমালোচনার প্রেক্ষিতে ওই রাতের মধ্যে কর্তৃপক্ষ ওষুধ সরিয়ে ফেলে।
গত রোববার বাটাজোর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে পরিত্যক্ত জমিতে সরকারি বিপুল পরিমান ওষুধ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী।
এদিকে গত ৭ মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ উঠেছে বাটাজোর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. শুভ্রা দাসের বিরুদ্ধে। শুভ্রা দাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করে অন্যত্র বদলীর আবেদন করার কথা জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সাধারণ রোগীদের সরকারি ওষুধ দেয়া বাবদ তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতো স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) স্নিগ্ধা রায়। টাকা না দিলে ওষুধ নেই বলে ফিরিয়ে দেয়া হতো রোগীদের।
এছাড়া উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার স্নিগ্ধা রায় নিয়মিত কেন্দ্রে যান না বলে বলে অভিযোগ তার সহকর্মীদের।
তারা জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দায়িত্বরত স্যাকমো স্নিগ্ধা রায় নিয়মিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসেন না। কোন দিন সকালে অফিসে এলেও আবার সাড়ে ১২ টার মধ্যে চলে যান। তিনি রোগীদের ঠিকমতো ওষুধ দেন না বলে অভিযোগ তাদের।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) স্নিগ্ধা রায় জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে ওই ওষুধের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। অফিসের এক কর্মীকে পুরোন কাগজ পোড়াতে দিয়েছিলেন। সে কাগজ পোড়াতে গিয়ে ওই মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বাইরে ফেলে দিয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করার নিয়ম জানেন না বলে তিনি দাবি করেন।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাইয়্যেদ মো. আমরুল্লা জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে সরকারি ওষুধ ছড়িয়ে রাখার সুযোগ নেই। ওষুধের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি সিভিল সার্জনকে অবহিত করে সেগুলো ধ্বংস করতে হবে। স্যাকমো স্নিগ্ধা রায় নিয়মিত অফিস করেন না বলে তার কাছেও অভিযোগ আছে।
এদিকে বাটাজোর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. শুভ্রা দাস গত বছরের ডিসেম্বরে যোগদানের পর থেকে অফিসে অনিয়মিত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। গত মার্চের পর থেকে অফিসে আসেননি তিনি। একটানা অফিসে অনুপস্থিত থাকায় ওই এলাকার মানুষ চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে।
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর বাটাজোর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগদান করেন ৩৯তম বিসিএস উত্তীর্ণ ডা. শুভ্রা দাস। গত মার্চ মাস থেকে কর্মস্থলে একটানা অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি। গত প্রায় ৭ মাসে এক দিনের জন্য অফিসে যাননি তিনি।
মুঠোফোনে ডা. শুভ্রা দাস জানান, তার বাড়ী চট্টগ্রামের রাউজানে। তিনি অবিবাহিত। তার পক্ষে কর্মস্থলে একা থাকা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যত্র বদলীর জন্য আবেদন করেছেন বলে দাবি করেন শুভ্রা দাস।
বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইয়্যেদ মো. আমরুল্লাহ।