মহানগরে রাস্তা সংস্কারে বাজিমাত মেয়র সাদিক

মহানগরে রাস্তা সংস্কারে বাজিমাত মেয়র সাদিক
এক রাস্তা নির্মাণ করে বাজিমাত করছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। বরিশাল নগরীর অভ্যন্তরে প্রথমবারের মতো আধুনিক পেভার মেশিন দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। এর আগে এত সুন্দর রাস্তা দেখেননি নগরবাসী। গত প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে নগরীর অভ্যন্তরে আধুনিক মেশিন দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে সবার মুখে প্রশংসায় ভাসছেন সাদিক আবদুল্লাহ। বর্তমান পরিষদের গত প্রায় ৮ মাসে নগরীর মধ্যে দৃশ্যমান বড় ধরণের কোন অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ চোখে না পড়লেও সদ্য নির্মিত রাস্তা চোখ পড়েছে সবার। নির্মিত রাস্তার ৫ বছরের গ্যারান্টি দিচ্ছেন তিনি। ৫ বছরের মধ্যে যে কোন ধরণের সংস্কার কিংবা মেরামত প্রয়োজন হলে ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে সেগুলো মেরামত করে দেবেন বলে জানিয়েছেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। ভোলা, পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, পায়রা, বরগুনা, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বাগেরহাট, বাকেরগঞ্জ ও নলছিটিসহ নগরীর দক্ষিণাংশের লাখ লাখ মানুষের বরিশাল নগরীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে ব্যবহার করতে হয় আমতলা বিজয় বিহঙ্গ মোড় থেকে নূরিয়া স্কুল-বাংলাবাজার-পুলিশ লাইনস- জিলা স্কুল সড়ক (কাগুজে নাম শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক)। বরিশাল নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। ২০০২ সালে সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর অন্তত ২-৩ বার সংস্কার করা হতো গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি। প্রতি বারই হতো অর্থের অপচয়। মেরামতের কিছুদিন পরই খানাখন্দে ভেরে যেত সড়কটি। আর ভোগান্তিতে পড়তে হতো নগরবাসীদের। বর্ষায় ভোগান্তির মাত্রা আরও বেড়ে যেত। এবার সেই সড়কে ‘ডেঞ্চ কার্পেটিং’ করছেন সাদিক আবদুল্লাহ। আধুনিক বিটুমিন মিক্সিং প্লান্টে ৪ প্রকারের পাথর এবং বিটুমিন মিক্সিং করে পেভার মেশিন দিয়ে প্রায় ৬০ মিলিমিটার (আড়াই ইঞ্চি) পুরু সড়ক নির্মাণ করছেন সাদিক আবদুল্লাহ। শুধু ওই সড়কই নয়, আমতলা বিজয় বিহঙ্গ মোড় থেকে সদর রোড, নাজিরের পোল এবং সোনালী আইসক্রিম মোড় হয়ে পলাশপুর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এবং জেলাখানা মোড় থেকে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সোয়া ২ কিলোমিটার সড়কে ‘ডেঞ্চ কার্পেটিং’ এর কাজ চলছে। ইতিমধ্যে আমতলা থেকে পলাশপুর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে জেলখানা মোড় থেকে নথুল্লাবাদ পর্যন্ত সোয়া ২ কিলোমিটার সড়কের ‘ডেঞ্চ কার্পেটিং’ কাজের উদ্বোধন করেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। নগরীর আমতলার বাসিন্দা রেজাউল কবির জানান, মহাসড়কের আদলে সিটির মধ্যে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে দির্ঘ মেয়াদী ফল পাওয়া যাবে। নগরবাসী ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবে। নগরীর সার্কুলার রোডের বাসিন্দা গিয়াসউদ্দিন জানান, আমরা সিটি মেয়রের রাস্তা নির্মাণ কাজে সন্তুষ্ট। নগরীতে এই ধরণের কাজ প্রথম হয়েছে। এই রাস্তার মান এবং ফিনিশিং অনেক ভালো। এবারের রাস্তার কাজ টেকসই হবে বলে তারা আশা করছেন। নগরীর আলেকান্দার বাসিন্দা নুরুল আলম নুরু বলেন, এত সুন্দর রাস্তা এর আগে দেখেনি বরিশালবাসী। এর আগে এক বছরের মধ্যে ২-৩বার এই রাস্তা সংস্কার হয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলস্বরূপ জনদুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিলো। মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ উন্নয়নের যে ধারা সূচিত করেছেন, তা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন বেসরকারী চাকুরীজীবী নুরুল আলম নুরু। বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্ববাধায়ক প্রকৌশলী মু. আনিচুজ্জামান জানান, আমতলা থেকে পলাশপুর ব্রিজ এবং জেলখানা মোড় থেকে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত প্রায় সোয়া ৫ কিলোমিটার ‘ডেঞ্চ কার্পেটিং’ কাজ করছেন এম. খান গ্রুপ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এই সড়কের কাজ আরও অন্তত ২ সপ্তাহ চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, আগে এসব সড়ক বছরে দুই তিনবার সংস্কার হতো। এবার বিরিশালে সড়ক বিভাগের সব চেয়ে বড় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে কাজ শুরু করেছেন। তারা ৫ বছরের গ্যারান্টি দিয়ে সড়ক নির্মাণ করছেন। এই সময়ের মধ্যে সড়কে যে কোন প্রকার সংস্কার প্রয়োজন হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করে দেবে। মেয়র সাদিক বলেন, সিটির মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের রাস্তা হচ্ছে। এই রাস্তায় কোন ধরণের ভাইব্রেশন নেই। বরিশালে এই ধরণের রাস্তা আগে কখনও হয়নি। তিনি বলেন, এখন কিছু টাকা বেশি লাগলেও রাস্তা টেকসই হবে। এতে সাশ্রয় হওয়া টাকা দিয়ে তিনি বর্ধিত এলাকার রাস্তা নির্মাণ করতে পারবেন।