মিথ্যা তথ্যে ঋণ গ্রহণে জরিমানা ও কারাদণ্ড

মিথ্যা তথ্যে ঋণ গ্রহণে জরিমানা ও কারাদণ্ড


বাড়ি বা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহণে মিথ্যা তথ্য দিলে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন আইন ২০১৯’ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর আগে মিথ্যা তথ্যে ২ বছরের কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান ছিল। নতুন আইনে অর্থ ও কারাদণ্ড বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এসব তথ্য জানান। এর আগে সকাল দশটায় প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বৈঠকের শুরুতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা ৫ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা পুস্তক আকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।

মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ১৯৭৩ সালের অর্ডার দিয়ে চলছিল বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পাঠানো প্রস্তাবনা অনুযায়ী বেশ কিছু সংশোধন এনে ‘বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন আইন ২০১৯’ এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। 

তিনি জানান, নতুন আইনে অর্থ ও কারাদণ্ড বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাড়ি বা ভবন নির্মাণে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিলে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন আইন ২০১৯’ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর আগে মিথ্যা তথ্যে ২ বছরের কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান ছিল।

শফিউল আলম আরও জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা-২০১৯ এবং আকাশ পথে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান রেখে ‘আকাশ পরিবহন (মন্টিল কনভেনশন ১৯৯৯) আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। 

সচিব সাংবাদিকদের বলেন, চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালাটির উদ্দেশ্য হলো- উন্নত ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য খাতকে প্রতিযোগিতায় সক্ষমকরণ ও আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করা।

তিনি জানান, চামড়া শিল্প দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত। ২০২৪ সাল নাগাদ এ খাত থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে, এটা যেন আমরা অর্জন করতে পারি সে জন্য আইনটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা সমন্বয়ক পরিষদে শিল্পমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৪১ সদস্যের কমিটি হবে বলে জানান তিনি।

আকাশ পথে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান রেখে ‘আকাশ পরিবহন (মন্টিল কনভেনশন ১৯৯৯) আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বিমানে দুর্ঘটনায় যাত্রীর প্রাণহানি বা মালামাল খোয়ার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হলে দেশি বা আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের মালিক বা কর্তৃপক্ষকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। 

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আইনের মূল ফোকাসটা হচ্ছে উড়োজাহাজযোগে যাত্রী, ব্যাগেজ ও কার্গো পরিবহনের ক্ষেত্রে যদি যাত্রীর মৃত্যু হয়, আঘাতপ্রাপ্ত হয়, ব্যাগেজ প্রাপ্তিতে বিলম্ব হয় বা হারিয়ে যায় বা ক্ষয়ক্ষতি হয়; কার্গো প্রাপ্তিতে বিলম্ব, হারানো বা ক্ষয়ক্ষতির ক্ষেত্রে এই আইনের মাধ্যমে আমরা প্রতিকার পেতে পারি।’

তিনি জানান, এসব আইনের খসড়া এখন বেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। যাচাই-বাছাইয়ের পর আবারো মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদনের পর পাঠানো হবে সংসদে। সংসদের অনুমোদনের পর গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে বলে জানান সচিব।