মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ব্রিটিশ বাংলাদেশী লুসি হল্ট বাসায় ফিরেছেন

মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ব্রিটিশ বাংলাদেশী লুসি হল্ট বাসায় ফিরেছেন

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্রিটিশ বংশোদ্ভুত বাংলাদেশী নাগরিক লুসি হেলেন হল্ট (৯১) সুস্থ্য হয়ে অক্সফোর্ড মিশনে ফিরে গেছেন। হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের গঠিত মেডিকেল বোর্ডের মতামতের প্রেক্ষিতে তাঁকে হাসপতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

সোমবার দুপুরের পর তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মনিরুজ্জামান। 

এর আগে সকালে শেবাচিমের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম এক চিঠিতে লুসির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ৪ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. দেবব্রত পাল, অর্থপেডিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. খাদেমুল ইসলাম ও নিউরো মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অমিতাভ সরকারের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয় বলে জানান সহকারী পরিচালক। 

নগরীর অক্সফোর্ড মিশনের বাসিন্দা ব্রিটিশ বাংলাদেশী নাগরিক লুসি বয়স জনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৮ নভেম্বর তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপতালের মেডিসিন (মহিলা) ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসায় আর্থিকসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়েছে সমাজ সেবা বিভাগ। চিকিৎসায় তুলনামুলক সুস্থ্য হলে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে ৪ দিন পর তাকে ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে তাকে অক্সফোর্ড মিশনের নিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। 

ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন হল্ট ১৯৬০ সালে বরিশাল অক্সফোর্র্ড মিশনে সেবিকা হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি খুলনা, যশোর, নওগা, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে অক্সফোর্ড মিশনে কাজ করেন। যশোরে থাকাবস্থায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে আহত প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সেবা করেন। ২০০৪ সালে মিশনের চাকুরী থেকে অবসর নিলেও দেশের মায়া ভুলে বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে থেকে যান চিরকুমারী লুসি। এক পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশী নাগরিকত্বের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ২০১৮ সালে বরিশালের এক জনসভায় লুসির হাতে বাংলাদেশী পাসপোর্ট তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমৃত্যু বরিশালেই থাকার ইচ্ছে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু লুসির।