শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন
গতকাল শনিবার ছিল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ও পবিত্রতম ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা। বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নানা আয়োজনের মাধ্যমে গৌতমবুদ্ধের জন্মদিন পালন করেছে। বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বুদ্ধ পূজাসহ পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, সমবেত প্রার্থনা এবং নানাবিধ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তারা বুদ্ধানুস্মৃতি ও সংঘানুস্মৃতি ভাবনা করেন। বিবিধ পূজা ও আচার-অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিবিধ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেছিলেন নেপালের লুম্বিনী কাননে। ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি সাধনায় সিদ্ধি লাভ করে জগতে বুদ্ধ নামে খ্যাত হন। ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্বলাভের মধ্য দিয়েই জগতে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তিত হয়। বুদ্ধত্ব লাভের পর বুদ্ধদেব জীবের মুক্তি কামনায় ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র’ নামে জীবনের সর্ববিধ ক্লেশ থেকে মুক্তির উপায় আবিষ্কার করেন। তিনি চতুরার্যসত্য নামে খ্যাত এক তত্ত্বে জীবনে দুঃখের উৎপত্তি ও দুঃখ ভোগের কারণ এবং দুঃখ থেকে মুক্তির পথ নির্দেশ করেন। মুক্তির এই পথ নির্দেশনাকে বলা হয় আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ বা আটটি আর্যপথ। দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছর তিনি প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল পরিভ্রমণ করে তাঁর এই ধর্মতত্ত্ব প্রচার করেন। রাজা-প্রজা, ধনী-নির্ধন, কুলীন-অন্তজ সর্বশ্রেণির মানুষের নিকট মুক্তির কথা তুলে ধরে তিনি জগতে এক নতুন ধর্মাদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন। আশি বছর বয়সে হিরণ্যবতী নদীর তীরে কুশিনারার মল্লদের শালবনে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই ধর্মের অনুসারীদের বিশ^াস মতে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। এই মহাপরিনির্বাণ লাভের ক্ষণও ছিল বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে। গতকাল শনিবার দেশের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারগুলিতে বুদ্ধের মহাজীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনাসহ ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়। শিশু-কিশোরদের মধ্যেও নানা উৎসবমুখর আনুষ্ঠানিকতার ধুম পড়ে যায়। এই পূর্ণিমাকে ঘিরে অনেক বৗদ্ধবিহারে চলে দিনব্যাপী নানামুখী অনুষ্ঠান। দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।