সালাহউদ্দিনকে দেশে ফেরাতে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান

ভারতের শিলং আদালতে বেকসুর খালাস পাওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদ একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। তাকে বিনা কারণে অন্যায়ভাবে দীর্ঘ ৮ বছর ভারতের কারাগারে কাটাতে হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত বেকসুর খালাস দেয়ার পর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব সরকারের। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি-সালাহউদ্দিনকে অবিলম্ব দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুন।
বৃহস্পতিবার বিকালে গুলশান বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদকে অবিলম্বে সসম্মানে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে ভারত সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি। আহ্বান জানাচ্ছি, তার মানবাধিকার সমুন্নত রাখারা জন্য, সম্মানিত করার জন্য।
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, ২০১৫ সালের উত্তাল সরকার বিরোধী আন্দোলন দমানোর জন্য ওই বছরের ১০ মার্চ রাতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে কিছু সাদা পোশাকধারী সশস্ত্র সদস্যুরা উত্তরার এক বন্ধুর বাসা থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে তুলে নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৬১ দিন অজ্ঞাত স্থানে তাকে গুম করে রাখা হয়। তারপর ওই বছরের ১০ মে চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি গাড়িতে করে তাকে দীর্ঘ পথযাত্রা করিয়ে ১১ মে ভোররাতে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে গলফ লিংক রাস্তার উপর ফেলে রেখে যায়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিজেই চোখ খুলে স্থানীয় পথচারীদের সহায়তায় শিলং পুলিশের কাছে তার পরিচয় এবং বিস্তারিত ঘটনা তুলে ধরলে পুলিশ তাকে ভারতের ফরেনার্স অ্যাক্ট, ১৯৪৬ এর বিধানমতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারতের আদালতে বিচারকালীন সময়ে রাষ্ট্রপক্ষের সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণ মোকাবেলা ও খণ্ডন করে এবং নিজের পক্ষে ৭০টি দালিলিক প্রমাণ ও সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন করে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, তিনি বাংলাদেশে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী কিছু সশস্ত্র ব্যক্তিদের দ্বারা অপহরণ ও গুম হয়েছিলেন। অপহরণকারীরা তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় সেখানে ফেলে রেখে আসে। ভারতীয় আদালত পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে সমস্ত সাক্ষ্য ও দলিল পর্যালোচনা করে তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করানোর জন্য ভারত সরকারকে নির্দেশনা দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে ভারত সরকার আপিল করলে আপিল আদালতও বিচারিক আদালতের বেকসুর খালাসের রায় ও প্রত্যাবর্তন করানোর নির্দেশনার আদেশ বহাল রাখেন।
বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন, নিপীড়ন, হামলা-মামলার অন্যতম শিকার সালাহউদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তার বেকসুর খালাসের রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, সালাহ উদ্দিন আহমেদকে বাংলাদেশের এই অবৈধ সরকার চক্রান্ত করে সীমাহীন নির্যাতন ও হয়রানি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র, বিএনপির চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান।