সিটি করপোরেশনে চাকুরীচ্যুত হওয়ার আতংক

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ২ জন নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১২ জন কর্মকতাকে স্থায়ীভাবে চাকুরীচ্যুত করার পর সাময়িক বরখাস্তকৃত এবং বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত (ওএসডি) ২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাঝে চাকুরী হারানোর আতংক দেখা দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ওই ১২জন কর্মকর্তাকে চাকুরীচ্যুত করার আদেশ হাতে হাতে পৌঁছে দেয়ার পর থেকেই অস্থিরতায় দিন কাটছে তাদের। তাদেরও একই পরিনতি ভোগ করতে হতে পারে বলে আশংকা করছেন তারা। ২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত এবং ওএসডি থাকার কথা স্বীকার করলেও তাদের ভবিষ্যত পরিণতি সম্পর্কে কিছু জানা নেই বলে দাবি করেছেন বিসিসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস।
মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন সিটি করপোরেশনের চতুর্থ পরিষদ দায়িত্ব নেয়ার পর অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্ধারিত কর্মস্থল থেকে সরিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওএসডি) দায়িত্বে নিযুক্ত করেন। অনেককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে চাকুরীচ্যুত করে বর্তমান পরিষদ। প্রথম দফায় কয়েক জনকে চাকুরীচ্যুত করার পরও সাময়িক বরখাস্তকৃত এবং ওএসডি থাকা কর্মকর্তারা না শোধরানোয় গত ১৯ জুলাই বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ২ জন নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১২ জন কর্মকতাকে স্থায়ীভাবে চাকুরীচ্যুত করা হয়। ওই আদেশে ২৯ জুলাই স্মারক নম্বর দিয়ে ১২ আগস্ট সংশ্লিষ্টদের হাতে হাতে অব্যাহতিপত্র পৌঁছে দেয়া হয়।
গত ১৯ জুলাই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওই অফিস আদেশ স্বাক্ষরের পরপরই ১২ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্তের খবর জানানো হয়। সব শেষ ১২ আগস্ট সংশ্লিষ্টরা হাতে হাতে বরখাস্তের চিঠি পাওয়ার পর বর্তমানে ওএসডি এবং সাময়িক বরখাস্ত থাকা ২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকুরী হারানোর আশংকা করছেন। চাকুরীচ্যুত হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে কিভাবে চলবেন সেই দুশ্চিন্তা জেঁকে বসেছে তাদের।
বর্তমানে ওএসডি থাকা দ্বিতীয় শ্রেণির এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ওএসডি হওয়ার পর থেকে বেতন বন্ধ তাদের। মাঝে গত বছর ঈদুল ফিরতে ২ মাস এবং ঈদুল আজহায় ১ মাসের বেতন পেয়েছিলেন। এখনও তাদের প্রায় ১৫ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এরপরও চাকুরীতে পুনর্বহাল হওয়ার আশায় ছিলেন তারা। কিন্তু ১২জন কর্মকর্তাকে একযোগে চাকুরীচ্যুত করার পর ওএসডি এবং সাময়িক বরখাস্তকৃত আরও ২২ জনকে চাকুরীচ্যুত করা হতে পারে বলে খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এতে তারা পরিবারসহ উদ্বিগ্ন।
আরেক কর্মকর্তা বলেন, আইন বহির্ভূতভাবে চাকুরীচ্যুত করা হলে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারতেন। কিন্তু বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর আমলে চাকুরীচ্যুত হওয়া কেউ ভয়েও আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা চিন্তা করেন না। তারা বর্তমান মেয়রকে আরও মানবিক হওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহম্মদের মুঠোফোনে কল দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসও এ নিয়ে কোন কথা বলতে রাজী হননি।