স্বজনদের আহাজারিতে শীতলক্ষ্যা পাড়

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে স্বজন হারানোর আহাজারি আর কান্নায় সেখানকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। এই নদীতেই কার্গো জাহাজের ধাক্কায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি লঞ্চ ডুবে গিয়েছিলো। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বেশকিছু মরদেহসহ লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত লাশগুলো নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি শাহ জামান। তবে নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তবে নিখোঁজ ৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
এর আগে রোববার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকায় একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এসকে-৩ রাবিত আল হাসান নামে লঞ্চটি ডুবে যায়।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন জানান, পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমাদের কার্যক্রম চলছে।
এদিকে নিখোঁজ রয়েছেন বেশকিছু যাত্রী। এর মধ্যে মহারানী, শুনিতা সাহা তার দুই ছেলে অনিক সাহা ও বিকাশ সাহা, সালাম বেগম ও সোলেমানসহ ৬ জনের নাম জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল আলম জানান, চর সৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর কাছাকাছি স্থানে একটি লাইটার জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চটি ডুবে যায়। নারায়ণগঞ্জ থেকে যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি মুন্সিগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। ডুবে যাওয়া লঞ্চটির মালিকের নাম আলাল হোসেন৷ তিনি মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা।
ডুবে যাওয়া লঞ্চের যাত্রী মুন্সিগঞ্জ এলাকার অটো চালক দিপু জানান, বড় একটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে লঞ্চটি ডুবে যায়। তিনি সাঁতরে তীরে ফিরতে পেরেছেন।
নদী বন্দর নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক মোবারক হোসেন জানান, ৪৩ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের দিকে রওয়ানা হয়। চরসৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর কাছাকাছি স্থানে অপর একটি জাহাজের ধাক্কায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনাস্থলে পুলিশ, নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। কালবৈশাখী ঝড় ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চটিতে আনুমানিক ৫০/৬০ জন যাত্রী ছিল।
এদিকে লঞ্চ ডুবির খবর পেয়ে যাত্রীদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাদের আহাজারিতে সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠে।