১৮ ঘন্টায় ঢাকা থেকে বরিশাল

লকডাউনেও মানুষের ছুটে চলা থেমে নেই। এক শহর থেকে অন্য শহর এমনকি রাজধানী ঢাকা থেকে জেলা শহর বরিশালসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে। কঠিন লকডাউন তাতে কি যাত্রা তো থামানো কঠিন। রাজধানী ঢাকা থেকে বরিশালে এসেছেন এমন অনেকে। দীর্ঘ ১৮ ঘন্টা নানা ঝক্কির পর বরিশালে পৌঁছেনে আরশাদ নামে এক নাগরিক। বরিশালে এসেই থেমে থাকেননি আরশাদ। তাঁর গন্তব্য হচ্ছে দ্বীপ জেলা ভোলায়।
করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক, নৌ এমনকি রেল যোগাযোগ প্রায় বন্ধ। একারণে বরিশালের সঙ্গে দেশের সকল রুটে বাস, লঞ্চসহ সকল যোগাযোগ বন্ধ। তাতে কি আসে যায়, মানুষের প্রয়োজন তো বন্ধ থাকছে না। তাই কঠিন লকডাউনেও যোগাযোগ বন্ধ রাখতে পারছে না এমন অনেক মানুষ। গত কয়েকদিন পন্যসামগ্রির বিভিন্ন বাহনসহ, মটর সাইকেল, অটো, রিকশায় করে দূরদূরান্ত থেকে বরিশাল আসছে ও যাচ্ছে মানুষ।
১৮ ঘন্টায় ঢাকা থেকে বরিশাল এসেছেন ভোলাগামী আরশাদ। সঙ্গে ছিলো তাঁর বোনের ছেলেণ সুমন। শুক্রবার দুপুর ১২ টায় বরিশাল নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান তিনি। নথুল্লাবাদ এলাকায় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সামনে মোটরসাইকেল থেকে নেমে টাকা পরিশোধ করতে দেখা যায় আরশাদকে। ঢাকা থেকে বরিশাল নগরে আসতে আরশাদ ৩০ বারের বেশি গাড়ি পরিবর্তন করেছেন। আরশাদ এবং তাঁর বোনের ছেলের জন্য ভাড়া গুনতে হয়েছে ১৫০০ টাকা হরে ৩ হাজার টাকা।
আরশাদ জানান, গত বৃহস্পতিবার ১ জুলাই সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে বোনছেলেকে সঙ্গে নিয়ে যাত্রা করেন তিনি। শুক্রবার দুপুর ১২ টায় বরিশাল এসেছেন। এবার তাঁর ছুটে চলা বরিশাল নদী বন্দরের উদ্দেশ্যে। যাবেন ভোলা সদরে। ঢাকা থেকে কখনো অটো, কখনো মাইক্রো, রাতে ফেরী, আবার প্রাইভেটকার, মটর সাইকেল, রিকশা, ভ্যান পরিবর্তন করে করে ১৮ ঘন্টা পর তিনি বরিশালে পৌঁছান।
আরশাদ আরও জানায়, দীর্ঘ পথে পুলিশ অনেকবার বাধা দিয়েছেন। তাদের জানিয়েছেন, শহরে থাকা খাওয়া কস্টের, বাবা অসুস্থ, কে কারে দেখে। পুলিশকে এসব কথা বুঝিয়ে বলার পর পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে।
আরশাদ ভোরের আলোকে জানান গৌরনদী পর থেকে বরিশাল পর্যন্ত মটরসাইকেল আসতে দুইজনকে ৬০০ টাকা দিতে হয়েছে। কোন যানবাহন আসতে চায় না। মোটরসাইকেল অনেক পথ ঘুরে বরিশালে নিয়ে এসছে। তাই মটরসাইকেলে অত্যাধিক ভাড়া নিয়েছে। লকডাউনে আমাদের মতো মানুষের দুর্ভোগের শেষ নাই। খাওয়া, থাকা, জীবন-জীবীকা সবকিছুর ওপর প্রভাব পড়েছে।