৫ বছর পর হলুদ অটোরিকশার বৈধতা দিচ্ছে বিসিসি

৫ বছর পর হলুদ অটোরিকশার বৈধতা দিচ্ছে বিসিসি

৫ বছর কাগজপত্র বিহীন চলার পর ব্যাটারি চালিত ৫ হাজার হলুদ অটোরিকশার বৈধতা দিচ্ছে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)। ৫ বছর পর বৈধতা পেতে যাওয়ায় খুশি অটোরিকশা মালিক-চালকরা। এতে পুলিশের হয়রানি এবং মামলা থেকে রক্ষা পাবেন বলে আশা তাদের। বৈধতা দিতে ইতিমধ্যে ফরম বিতরণ শুরু করেছে বিসিসি। ফরম যাচাই বাছাই করে শিগগিরই প্রকৃত মালিকদের হলুদ অটোরিকশার বৈধতা দেয়া হবে বলে বিসিসি থেকে জানানো হয়েছে। 

ব্যাটারি চালিত হলুদ অটোরিকশার প্রথম বৈধতা দেন সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় পরিষদের (২০০৮-২০১৩ সাল) মেয়র শওকত হোসেন হিরন। ২০১৩ সালের আগস্টে সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামাল তৃতীয় পরিষদের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনিও কিছু অটোরিকশার লাইসেন্স দেন। মোট ২ হাজার ৬২৮টি বৈধ অটোরিকশা বাবদ বছরে প্রায় আড়াই কোটি টাকা রাজস্ব পেত বিসিসি। এর বাইরেও অন্তত ১০ হাজার হলুদ অটোরিকশার চলাচল করে নগরীতে। ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর চতুর্থ পরিষদের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ দায়িত্ব গ্রহণের পর অটোরিকশার লাইসেন্স নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি সিটি করপোরেশনের অটোরিকশার শাখা বিলুপ্ত করেন। 

সেই থেকে কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই চলছে ১০ হাজারের বেশি হলুদ অটোরিকশা। এতে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে বিসিসি তথা সরকার। বৈধতা না থাকায় ট্রাফিক পুলিশের হাতে প্রতিদিনই আটক হয় হলুদ অটোরিকশা। মোটা অংকের জরিমানা দিয়ে ছাড়াতে হয় সেগুলো। এভাবে প্রায় ৫ বছর আটক আর মামলা খেলার পর হলুদ অটোরিকশার বৈধতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন মেয়র। গত বছর ১৬ মে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে অটোরিকশা শ্রমিকদের এক সমাবেশে নতুন করে ৫ হাজার অটোরিকশার লাইসেন্স দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে চার্জিং পয়েন্ট করে দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন মেয়র। লাইসেন্স দেওয়ার পর নগরীতে অবৈধ কোন অটোরিকশা চলতে দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।  
প্রতিটি ওয়ার্ডে তালিকা তৈরির পর গত ১৯ জানুয়ারী থেকে অটোরিকশার লাইসেন্স দেয়ার জন্য ফরম বিতরন শুরু করে নগর ভবন। আজ ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার আবেদন ফরম দেয়া হয়েছে বিনামূল্যে। তবে একেকটি অটোরিকশার লাইসেন্স বাবদ কত টাকা রাজস্ব নেয়া হবে তা এখনও চূড়ান্ত করেনি বিসিসি। 

অটোরিকশা লাইসেন্স প্রদানে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিসিসি’র রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার জানান, ১৯ জানুয়ারি ফরম বিতরন শুরু হয়েছে। এটি চলমান প্রক্রিয়া। অটোরিকশা লাইসেন্স প্রদান বাবদ রাজস্ব ফি নির্ধারণ করবে বিসিসি পরিষদ। আজকে পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ফরম বিতরণ হয়েছে বলে তিনি জানান। 

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বরিশাল নগরীতে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা নেই। ভাড়া আদায়ে তারা স্বেচ্ছাচার। গ্রামের অনেক অটোরিকশা শহরে এসে যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য মেয়র ৫ হাজার অটোরিক্সা লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। লাইসেন্সকৃত সব অটোরিকশা একই ধরনের রং করা থাকবে। এতে তারা জবাবদিহীতার আওতায় থাকবে। আইনের আওতায় আনা সহজ হবে। লাইসেন্স প্রদানের পর কাগজপত্র বিহীন অবৈধ অটোরিকশা উচ্ছেদের জন্য মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে বৈধ অটোরিকশার তালিকা দেয়া হবে। পুলিশ অবৈধ অটোরিক্সার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি জানান।