অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্কের দায়ে আইনজীবী কারাগারে

অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্কের দায়ে আইনজীবী কারাগারে

বরিশালে এক যুবকের সঙ্গে অস্বাভাবিক যৌন মিলন করার অভিযোগে একজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
নৈতিক অবক্ষয়ের অভিযোগে বিচারের আগ পর্যন্ত ওই আইনজীবীর সনদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বরিশালের সুশীল সমাজ প্রতিনিধিরা। তবে ওই আইনজীবীর অপরাধ প্রমাণিত হলে তার দায় সমিতি নেবে না বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা। 

অভিযুক্ত শামসুল হক নগরীর মুসলিম গোরস্থান রোড এলাকার বাসিন্দা এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য।

বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম জানান, অভিযোগকারী যুবক রাজিব রায় নগরীর কাউনিয়া প্রথম লেনের বাসিন্দা বিভূতি রায়ের ছেলে। তৃতীয় লিঙ্গের কথা বলা হলেও সে নিজেকে তৃতীয় লিঙ্গের বলে দাবি করেন না। তবে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষর সঙ্গে চলাফেরা করে সে। 

ওসি জানান, গত শনিবার রাতে রাজিব রায় (২৪) কোতয়ালী মডেল থানায় আইনজীবী শামসুল হকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৮ মাস ধরে শামসুল হক তার সঙ্গে অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে আসছে। অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্কের ভিডিও ক্লিপ পুলিশকে দেন তিনি। এ ঘটনায় মামলা রুজুর পর ওই রাতেই আইনজীবী শামসুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে গতকাল রবিবার বরিশালের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। 

বিকেল ৩টায় আদালতের বিচারক মারুফ আহমেদ প্রকাশ্য আদালতে শুনানী শেষে আসামী শামসুল হকের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ওই আদালতের জিআরও এসআই খোকন চন্দ্র। 

অপরদিকে অভিযোগকারী যুবককে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য গতকাল রবিবার সকালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী মডেল থানার এসআই ফজলুল হক। 
ভিকটিমের শারীরিক এবং ডায়াগনোসিস পরীক্ষার রিপোর্ট আদালতে পাঠানোর কথা বলেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. রেফায়েতুল হায়দার। 

একজন সিরিয়র আইনজীবীর নৈতিক অবক্ষয়ের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক শাহ্ সাজেদা। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি মামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত আইনজীবীর সনদ বাতিলের দাবি জানান তিনি। 
তবে যুবকের সঙ্গে অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক করার অভিযোগ অস্বীকার করেন পুলিশের হেফাজতে থাকা আইনজীবী শামসুল হক।

 এদিকে পুলিশের তদন্তে ওই আইনজীবীর অপরাধ প্রমাণিত হলে বিষয়টি নিন্দনীয় হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম। অপরাধ প্রমাণিত হলে এর দায় ব্যক্তির উপর বর্তায়। আইনজীবী সমিতি কোনভাবেই এর দায় নেবে না বলে জানান তিনি।