"নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে এসআই পুনর্বহালের দাবিতে আমরণ অনশন"

গত দুই দিন ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে চাকরি ফিরে পেতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শৃঙ্খলাভঙ্গসহ বিভিন্ন কারণে চাকরি হারানো ৩২১ জন সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই)। এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিতর্কিত নেতা মামুনুর রশীদ মামুন।
গত ১৩ জানুয়ারি সকালে সচিবালয়ের সামনে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ৪০তম (ক্যাডেট) সাব-ইন্সপেক্টর ব্যাচের সদস্যরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। আন্দোলনকারীরা তাদের চাকরি ফিরে পাওয়ার নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মামুন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিভিন্ন মিডিয়ার সামনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তিনি বলেন, "৩২১টি পরিবার দেশের ১৮ কোটি মানুষের সেবা দিতে প্রস্তুত। আমাদের কোনো অপরাধ থাকলে তা প্রমাণ করুন, আর বাকিদের চাকরিতে বহাল করুন।"
মামুন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রলীগে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করলেও তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক সেবন, শিক্ষার্থীদের মারধর, এবং সিট বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
বেরোবির এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মামুন ছাত্রলীগের পরিচয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিসে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে।
মামুনের রাজনৈতিক প্রভাবের পেছনে সাবেক নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপুর সখ্যতার কথা জানা যায়। অভিযোগ রয়েছে, মামুন অসাধু উপায়ে এসআই পদে চাকরি পেয়েছিলেন।
ছাত্র-জনতা মামুনের নেতৃত্বে এসআই পুনর্বহালের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম আশিকুর রহমান বলেন, "ছাত্রলীগ কোটায় যেসব সন্ত্রাসী পুলিশে ঢুকেছিল, তাদের বহিষ্কার করা সঠিক সিদ্ধান্ত। অনশনের নামে এই অপচেষ্টা রুখে দিতে হবে।"
মামুনুর রশীদ মামুনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই আন্দোলন এবং এর নেতৃত্ব নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলছে। প্রশাসনের এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।