প্রাথমিকে নতুন নিয়োগের আগে বদলি চালুর চিন্তা

সরকারি প্রাথমিকে চলছে সহকারী শিক্ষকদের মৌখিক পরীক্ষা। এরপর সারাদেশের প্রাথমিকে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। তবে নতুন শিক্ষক নিয়োগের আগেই বদলি কার্যক্রম চালুর চিন্তা করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বুধবার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুহিবুর রহমান বলেন, এটি বাস্তবায়ন করতে উপরের লেভেলের সিদ্ধান্ত লাগবে। আর সিস্টেম ডেভেলপমেন্টের বিষয়টিও তৈরি রাখতে হবে। তাহলেই এটি সম্ভব। তবে আমি কাজ করে যাচ্ছি। দেখা যাক বাকিটা কী হয়।
জানা যায়, দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বদলি বন্ধ রয়েছে। গত মাসে গাজিপুরের কালিয়াকৈরে অনলাইনে বদলি কার্যক্রমের পাইলটিং প্রকল্প চালু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অনলাইনে কিভাবে আবেদন দেবে, কিভাবে যাচাই-বাছাই হবে ডিজিটালি এই বিষয়টিই দেখা হচ্ছে। এখান থেকে অনলাইনে বদলির সুবিধা-অসুবিধাগুলো দেখার পর সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে বদলি চালু করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজিপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় অনলাইন বদলি কার্যক্রমের কাজ চলছে। আগামী রোববার ১৮ জন শিক্ষককে অনলাইনে বদলির অর্ডার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন গাজিপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, এর আগে ডিজিটালি এই কর্মকাণ্ডে প্রাথমিক কিছু সমস্যার কথাও জানান তিনি। তবে সে সমস্যার সমাধান করে বদলি শুরু করা হচ্ছে ।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অনেক উপজেলা আছে যেখানে স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি; কিন্তু শিক্ষকের সংখ্যা কম। আবার অনেক উপজেলায় শিক্ষার্থী অনুযায়ী শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। মূলত এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। যেকারণে শুধু মাত্র উপজেলার অভ্যন্তওে ডিজিটাল বদলি চালু করা হতে পারে। তবে জেলাভিত্তিক ও বিভাগীয় পর্যায়ে বদলি চালুর কথা এখনো ভাবছে না অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, দুবছরের বেশি সময় প্রাথমিকে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম বন্ধ। ফেব্রুয়ারিতে অনলাইনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম শুরুর কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। মার্চে বদলি কার্যক্রম শুরুর আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। তবে এখনো এ বিষয়ে কিছুই হয়নি। দীর্ঘদিন বদলি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষক সংকটে আছেন।
আলিফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার স্ত্রী কুষ্টিয়ার একটি প্রত্যন্ত জায়গার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। স্কুলে বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হন। এখন তিনি হাটতে পারে না। এই অবস্থায় কিভাবে এত দূরে স্কুল করবে তা জানতে ও বদলির আবেদন নিয়ে অধিদপ্তরে এসেছি। তবে পুরো সিস্টেম বন্ধ থাকায় কেউ কিছু বলছেন না।
এ বিষয়ে কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষক নিয়োগের পর আগামী জানুয়ারিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি চালু করার কথা রয়েছে। তবে এর আগেও এটি খুলে দেয়া হতে পারে। দীর্ঘদিন বদলি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষকদের সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি আমরাও অবগত আছি।
শিক্ষক নেতারা বলেন, নতুন নিয়োগের আগে বদলি দীর্ঘদিন ধরে যারা কর্মরত তাদের জন্য স্বস্তির হবে। আর যদি নিয়োগের পর বদলি চালু করা হয় তবে শিক্ষকদের ভোগান্তির শেষ থাকবে না।