শেবাচিমে ১১ দিন ধরে আরটি পিসিআর মেশিন বিকল

শেবাচিমে ১১ দিন ধরে আরটি পিসিআর মেশিন বিকল

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের (শেবাচিম) আরটি পিসিআর মেশিনটি গত ১১ দিন ধরে বিকল। এদিকে গত আগস্ট মাসে মেডিকেল কলেজে প্রেরন করা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দ্বিতীয় আরটি পিসিআর মেশিনটিও আনুষাঙ্গিক কিছু যন্ত্রপাতির অভাবে চালু করা যাচ্ছে না। এ কারনে বরিশাল মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে করোনার নমূনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। বরিশালে সংগৃহীত করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ভোলার আরটি পিসিআর ল্যাবে। এতে রিপোর্ট পেতে দির্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অপরদিকে শের-ই বাংলা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে আবার বাড়ছে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে একজন রোগীর। 

গত বছর ৮ এপ্রিল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে দক্ষিনাঞ্চলের সর্বপ্রথম আরটি পিসিআর ল্যাব চালু করা হয়। প্রাদুর্ভাবের সময় মেডিকেল কলেজ সহ বিভাগের অন্যান্য জেলা থেকে গড়ে প্রায় ৫শ’ নমুনা সংগ্রহ হতো। কিন্তু মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে দৈনিক গড়ে প্রায় ২শ’ টি নমুনা পরীক্ষা করা হতো। বাকী নমুনা পাঠানো হতো ঢাকায়। এ কারনে রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হতো। এ অবস্থায় নমুনা পরীক্ষার জট কমাতে গত আগস্টে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি আরটি পিসিআর মেশিন সরবরাহ করা হয় বরিশাল মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে। ওই মেশিনটি চালু হলে দৈনিক গড়ে ৭ শতাধিক নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হতো। কিন্তু পাওয়ার সাপ্লাই সহ আনুষাঙ্গিক কিছু যন্ত্রপাতি না থাকায় গত ৫ মাসেও ওই মেশিনটি চালু করা যায়নি। এদিকে মেডিকেল কলেজের ল্যাবে সর্বপ্রথম স্থাপিত সচল একমাত্র মেশিনটি গত ৮ আগস্ট অচল হয়ে গেছে। এ কারনে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে প্রতিদিন সংগৃহীত প্রায় ১শ’ নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ভোলার আরটি পিসিআর ল্যাবে। 

মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডের তথ্য সংরক্ষক জাকারিয়া স্বপন বলেন, শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হলে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যেত। বর্তমানে ভোলার ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে ৭২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। 

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবের প্রধান ডা. আকবর কবির জানান, পিসিআর মেশিনটি গত ৮ ডিসেম্বর অচল হয়ে যায়। মেশিনটির ওয়ারেন্টি টাইম ১ বছরও অতিবাহিত হয়েছে। তারপরও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওভারসিস মার্কেটিং কোম্পানীকে (ওএমসি)জানানো হয়। তারা বলেছে মেশিনের এলইডি প্যানেল অথবা সার্কিট নস্ট হয়ে গেছে। বিষয়টি প্রথমে মৌখিকভাবে সংশ্লিস্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। পরে একাধিকবার চিঠি দিয়ে মেশিনটি সচল করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দেয়া হয়। সব শেষ গতকাল শনিবারও এ বিষয়ে ফোনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। পিসিআর মেশিন সচল করার জন্য সদর আসনের এমপি ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের কাছেও চিঠি দিয়েছেন। এখন অপেক্ষায় আছেন মেশিন সচলের। 

এ বিষয়ে সদর আসনের এমপি ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান স্বাস্থ্য সেবা উপদেস্টা কমিটি নিস্ক্রিয় থাকায় এই অবস্থার সৃস্টি হয়েছে। পিসিআর মেশিন সচলের জন্য নিজ অবস্থান থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেন তিনি। 

এদিকে মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে আবার বাড়ছে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা। ৩ দিন পর গতকাল করোনা ওয়ার্ডে একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। 

মেডিকেলের পরিচালক কার্যালয় থেকে জানা যায়, গত শুক্রবার করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলো ৪জন রোগী। গত ২৪ ঘন্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নানা উপসর্গ নিয়ে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৯ জন রোগী। এ সময়ে চিকিৎসায় সুস্থ্য হয়ে একজন রোগী বাড়ি ফিরে গেছেন। গতকাল সকাল পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলো ১১জন রোগী।