ইসলামী ব্যাংক নার্সিং ইনস্টিটিউট: প্রশাসনিক কর্মকর্তার ছাত্রীকে একান্তে পাওয়ার প্রস্তাবের অভিযোগ

ইসলামী ব্যাংক নার্সিং ইনস্টিটিউট: প্রশাসনিক কর্মকর্তার ছাত্রীকে একান্তে পাওয়ার প্রস্তাবের অভিযোগ


বরিশাল ইসলামী ব্যাংক নার্সিং ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রীকে একান্তে পাওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা নূর উদ্দিনের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রীর বেতন মওকুফের আবেদন কার্যকর করতে এই অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। গত নভেম্বর মাসে ইনস্টিটিউটের ছাত্রী পিরোজপুর জেলার ওই ছাত্রীকে প্রস্তাব দেয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

এব্যাপারে ওই ছাত্রী প্রমাণসহ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে কর্তৃপক্ষ অভিযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ইনস্টিটিউটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের হুশিয়ারী দিলে কর্তৃপক্ষ গত ২৪ ডিসেম্বর প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আবেদন গ্রহন করের। বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যাওয়া আশংকা করছেন অন্যান্য শিক্ষার্থীরা। 

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানিয়েছে, করোনাকালে নার্সিং ইনস্টিটিউটের পুরো বেতন পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। বকেয়া বেতনের জন্য ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে তার ওপর চাপ প্রয়োগ করছিলেন ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নূর উদ্দিন। ছাত্রী এই মুহূর্তে বেতন পরিশোধ করতে পারবে না বলে জানায়। এ নিয়ে নানা কথাবার্তার এক পর্যায়ে বেতন মওকুফ করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা নূর উদ্দিন ওই ছাত্রীকে তার সঙ্গে একান্তে দেখা করতে বলেন। কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হবে বলে জানায় নূরউদ্দিন। এতে ওই শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। এক পর্যায়ে বিব্রত হয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা নূর উদ্দিন তার কথা না শুনলে ইনস্টিটিউট থেকে পাশ করে বের হতে পারবে না বলে ছাত্রীকে হুমকী দেয়। এ ঘটনায় ম্যাসেঞ্জারের স্ক্রিনশটসহ অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়।

 ওই ছাত্রী আরও জানায়, মান-ইজ্জতের ভয়ে তিনি বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। কিন্তু প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাকে একান্তে দেখা করা এবং রাতে থাকার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেয়ায় তিনি মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন। এ ঘটনায় গত ১৪ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে তার মানসিক সমস্যা আছে দাবি করে কলেজ প্রশাসন অভিযোগ নিতে টালবাহানা করে। সহপাঠীরা আন্দোলনের হুমকি দিলে গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ তার লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন। এ ঘটনা তদন্ত করে বিচার দাবি করেন ওই ছাত্রী। তবে অধ্যক্ষ অভিযুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তার পক্ষাবলম্বন করায় এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে শিক্ষার্থীদের। 

ইসলামী ব্যাংক নার্সিং ইনস্টিটিউটের অভিযুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা নূর উদ্দিন বলেন, তিনি কাউকে অনৈতিক প্রস্তাব দেননি। তৃতীয় কোন পক্ষ তাকে ফাঁসানোর জন্য ফেক আইডি করে মেসেঞ্জার এই ধরণের ঘটনা ঘটাতে পারে। 

ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আকলিমা বেগম বলেন, ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। পুরো বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর ওই ছাত্রী মিথ্যা অভিযোগ করলে তাকেও শাস্তি পেতে হবে।